দেশজুড়ে

ধর্মীয় পরিচয় গোপন করে শারীরিক সম্পর্ক, পুলিশ পরিদর্শক ক্লোজড

নিজ ধর্ম ও বিবাহিতের বিষয়টি গোপন রেখে বিয়ের প্রলোভনে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে মোংলা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হিরন্ময় সরকারের বিরুদ্ধে। ন্যায়বিচার পেতে যশোর থেকে মোংলায় এসে তিনদিন অবস্থান করেন ওই নারী।

তিনি মোংলা থানার ওসি, মোংলা-রামপাল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ও বাগেরহাট জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সঠিক বিচার না পেলে আত্মহত্যার হুমকিও দিয়েছেন তিনি।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত হিরন্ময় সরকারের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে তাকে মোংলা থানা থেকে প্রত্যাহার করে বাগেরহাট পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংযুক্ত (ক্লোজড) করা হয়েছে।

রোববার (১২ মে) তাকে সংযুক্ত করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন বাগেরহাট জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আবুল হাসনাত খান।

ভুক্তভোগীর (৩২) বাড়ি যশোর কোতোয়ালি থানা এলাকায়। তিনি নিজেকে মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বলে দাবি করেন।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় পাঁচ বছর আগে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (পিবিআই) চাকরি করার সময় পুলিশ কর্মকর্তা হিরন্ময় সরকারের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তখন হিরন্ময় নিজেকে মুসলিম ধর্মাবলম্বী বলে তাকে জানান। এরপর তাদের মধ্যে প্রেম, পরে বিয়ের আশ্বাসে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দীর্ঘ কয়েক বছর তার বাড়ি যশোর ও ঢাকায় আত্মীয়-স্বজনসহ পরিচিত সবার কাছে তাকে নিজের স্ত্রী পরিচয় দিতেন হিরন্ময় সরকার।

ভুক্তভোগী আরও উল্লেখ করেন, একপর্যায়ে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে নানা অজুহাতে তার গর্ভের সন্তান নষ্ট করানো হয়। পরে বিয়ের জন্য চাপ দিলে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন হিরন্ময় সরকার। এরপর তার খোঁজে মোংলায় আসেন ভুক্তভোগী।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) তিনি একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করেন। পরে মোংলা থানায় গিয়ে বিষয়টি ওসি কে এম আজিজুল ইসলাম ও সহকারী পুলিশ সুপার মুশফিকুর রহমান তুষারকে অবহিত করেন। শনিবার (১১ মে) বিকেলে বাগেরহাট পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন তিনি।

পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খান বলেন, অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে প্রমাণিত হলে হিরন্ময় সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাকে মোংলা থানা থেকে প্রত্যাহার করে তার কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে বলেও জানান এসপি।

অভিযোগের বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্ত হিরন্ময় সরকার বলেন, কয়েকমাস আগে ওই নারীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তবে শারীরিক সম্পর্কসহ বিয়ের প্রলোভনের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

তিনি আরও বলেন, ওই নারী স্রেফ তার বন্ধু ছিলেন। এখন তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করছেন। এ বিষয়ে তার কিছু বলার নেই। আবু হোসাইন সুমন/এসআর/এএসএম