নরসিংদীতে ইউপি নির্বাচন নিয়ে উস্কানিমূলক বক্তব্য ও আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে আওয়ামী লীগ নেতা ও চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে রায়পুরা থানায় মামলা দায়ের করেছেন রাধানগর ও মরজাল ইউনিয়নের রিটার্নিং কর্মকর্তা নারগিস সুলতানা। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাধানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (বর্তমানে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ের অপেক্ষায়) আবদুস সাদেক ও মরজাল ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী সানজিদা খাতুনের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেন তিনি। সম্প্রতি ২৫ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব আতিয়ার রহমান তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গে অভিযোগ এনে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে মামলার লিখিত নির্দেশনা দিয়েছেন। তবে নিজে কোনো ধরনের উস্কানিমূলক বক্তব্য না দিলেও নিজের প্রচারনায় এসে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়ায় মামলায় জড়িয়ে গেলেন নরসিংদী জেলার একমাত্র মহিলা চেয়ারম্যান প্রার্থী সানজিদা খাতুন। সানজিদা খাতুনের প্রতি বিশেষ নজর থাকায় এমন আক্রমনাত্মক বক্তব্য দিয়েছেন বলে মনে করছে জনগণ। তার পক্ষে সবাইকে নির্বাচনে কাজ করার জন্যই নেতাকর্মীদের হুমকি দিয়েছেন বলে জানা যায়।জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আগামী ৭ মে অনুষ্ঠিতব্য রায়পুরা উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাধানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্বাচনী প্রচারণাকালে প্রদত্ত বক্তব্য ইউনিয়ন পরিষদ বিধিমালা-২০১৬ এর বিধি ১৮(ক) ও ৩০ লঙ্ঘন করেছে। উক্ত অপরাধে নির্বাচন কমিশন নিম্নরূপ সিদ্ধান্ত প্রদান করেন।আচরণবিধি ভঙ্গকারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাধানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুস সাদেকের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের জন্য মামলা করা যেতে পারে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। পত্রে উপরোক্ত নির্দেশনা অনুয়ায়ী প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ পূর্বক অত্র সচিবালয়কে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করা হয়।এই ব্যাপারে জানতে চাইলে রাধানগর ও মরজাল ইউনিয়নের রিটানিং কর্মকর্তা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নারগিস সুলতানা বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়ছে। রায়পুরা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাস জানান, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলছে। আসামি গ্রেফতারের জন্য গ্রেফতারি পরোয়নার অপেক্ষায় আছি। উল্লেখ্য, গত ১৭ এপ্রিল রায়পুরা উপজেলার মরজাল বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় স্থানীয় মরজাল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী সানজিদা খাতুন নাসিমার নৌকা প্রতীকের পক্ষে নির্বাচনী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাদেক দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, যে ভাবেই বিজয়ী করেন, আমাদের কোনো আপত্তি নাই। কারে মারবেন কারে ধরবেন আমরা জানি না। আমরা জানি, শুধু নৌকা মার্কা বিজয়ী কইর্যা আনতে হবে। যদি না আনতে পারেন তাহলে আপনাদেরকে ছাড়বো না। বেলা ১১টার মধ্যে ভোট শেষ করতে হবে। এতে কার পা ভাঙবেন, আর কার হাত ভাঙবেন তা আপনারা জানেন। আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি।সঞ্জিত সাহা/এমএএস/আরআইপি