আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রিতে নতুন রেকর্ড, নেপথ্যে ২ যুদ্ধ

২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি রেকর্ড ৩১ হাজার ৮৭০ কোটি মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২৯ শতাংশ বেশি। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্যমতে, এগুলোর মধ্যে রয়েছে গাজায় গণহত্যায় অভিযুক্ত ইসরায়েলের কাছে ১ হাজার ৮৮০ কোটি ডলারের যুদ্ধবিমান বিক্রির চুক্তিও।

২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির পরিমাণ ছিল ২০ হাজার ৮০ কোটি ডলারের, যা ২০২৩ সালের ১৫ হাজার ৭৫০ কোটি ডলারের তুলনায় অনেক বেশি। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সহযোগিতায় সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি আগের বছরের ৮ হাজার ৯০ কোটি ডলার থেকে বেড়ে ১১ হাজার ৭৯০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে বলেছে, অস্ত্র বিক্রি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তার ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলে।

আরও পড়ুন>> 

ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেন ট্রাম্প বিদেশে সব ধরনের সহায়তা কার্যক্রম স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন স্বপ্নে বিভোর ভারতীয়দের দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে ট্রাম্পের ভিসা নীতি

২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে অনুমোদিত চুক্তিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল তুরস্কের জন্য ২ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের এফ-১৬ যুদ্ধবিমান এবং উন্নয়ন প্রকল্প, রোমানিয়ার জন্য ২৫০ কোটি ডলারের এম১এ২ আব্রামস ট্যাংক এবং ইসরায়েলের জন্য এফ-১৫ যুদ্ধবিমান।

তবে, অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম প্রোপাবলিকা জানিয়েছে, তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ইসরায়েলের মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে সরাসরি সতর্কতা উপেক্ষা করেছিলেন এবং গাজার যুদ্ধের মধ্যেও অস্ত্র সরবরাহ অনুমোদন করেছিলেন।

ইসরায়েলি বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞে গাজায় ৪৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা অস্ত্র দিয়ে চালানো হামলায় গাজার একাধিক শহর পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

মানবাধিকার সংগঠন ও জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা সাবেক বাইডেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের কথিত গণহত্যার পেছনে অর্থায়নের অভিযোগ তুলেছেন।

এদিকে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অস্ত্রের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় মার্কিন অস্ত্র নির্মাতারা উৎপাদন চাহিদা পূরণে হিমশিম খাচ্ছে। একই সঙ্গে, কিয়েভে অস্ত্র পাঠানোর কারণে নিজস্ব মজুত বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া, বিশ্বের অন্যান্য দেশও নিজেদের অস্ত্রাগার সমৃদ্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সামরিক সরঞ্জাম কিনতে প্রতিযোগিতা করছে।

২০২৪ সালে অনুমোদিত চুক্তিগুলোর কারণে মার্কিন অস্ত্র নির্মাতাদের কাছে বিপুল অর্ডার জমা হচ্ছে। ফলে তারা আর্টিলারি গোলা, প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র এবং সাঁজোয়া যানসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।

সূত্র: আল-জাজিরাকেএএ/