দেশজুড়ে

বরগুনায় বাস ধর্মঘটে চরম ভোগান্তিতে যাত্রীরা

বরগুনায় দূরপাল্লাসহ আন্তঃজেলা বাস চলাচলে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু হয়েছে। বরিশালের রূপাতলীতে বাস ভাঙচুর ও শ্রমিকদের নিরাপত্তার দাবিতে এ ধর্মঘট চলছে বলে জানিয়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন দূর-দুরন্ত থেকে আসা বিভিন্ন গন্তব্যের বাস যাত্রীরা।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল থেকে বরগুনার থেকে সব রুটে এ ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করছেন বাস শ্রমিকরা। বিভাগীয় নেতৃবৃন্দদের প্রত্যাহার আদেশ না পাওয়া পর্যন্ত বাস ধর্মঘট চলবে বলেও জানান তারা।

সরেজমিনে পৌর বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, দূরপাল্লার সব বাস বন্ধ থাকায় যাত্রীরা বাধ্য হয়ে বিকল্প যানবাহন সিএনজি, মাহিন্দ্রা ও মোটরসাইকেলে গন্তব্যে রওনা হচ্ছেন। এতে অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে এবং যাত্রা পথেও নানা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এদিকে বাসমালিক ও শ্রমিকরা সড়কে বিকল্প যানবাহনের চলাচলেও বাধা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।

ঢাকাগামী এক যাত্রী মো. শাহিন জাগো নিউজকে জানান, তিনি ব্যবসায়িক কাজে ঢাকায় ফিরতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বাস চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন। অনলাইনে টিকিট কাটা সত্ত্বেও বাস বন্ধের বিষয়ে আগে কোনো তথ্য না পাওয়ায় এখন বাস টার্মিনালে এসে বসে আছেন। কখন বাস ছাড়বে তাও নিশ্চিতভাবে কেউ বলতে পারছে না। কিভাবে এখন ঢাকায় যাব তা বুঝতে পারছি না।

মো. হেলাল খান নামে আরেক বাস যাত্রী জাগো নিউজকে বলেন, বাস চলাচল বন্ধ তা আগে জানলে বাসা থেকে বের হতাম না। টার্মিনালে এসে দেখি বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। আমি অনলাইনে বাসের টিকিট কেটেছি তখন যদি কেউ বলতো বাস চলাচল বন্ধ থাকবে তাহলে আর এ ভোগান্তিতে পড়তে হতো না।

এ বিষয়ে শ্রাবণী পরিবহনের স্টাফ মো. মুসা জাগো নিউজকে বলেন, বরিশালে বাসের ভাড়া নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঝামেলা হলে বাস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে শ্রমিকরা নিরাপত্তার দাবিতে ধর্মঘট শুরু করেছে। এখন বাস চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীরা এসে ফিরে যাচ্ছেন। শ্রমিকদের বিভিন্ন সময়ে যে হেনস্থার শিকার হতে হয় তার সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এ ধর্মঘট চলবে।

এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও শ্রমিক ইউনিয়নের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রোকনুজ্জামান সালাম জাগো নিউজকে বলেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়টি হাইওয়ে সড়কের পাশে হওয়ায় যেকোনো তুচ্ছ ঘটনা ঘটলেও শিক্ষার্থীরা গাড়ি ভাঙচুরসহ শ্রমিকদের মারধর করে। একের পর এক এমন ঘটনা ঘটতেই থাকে। গতকালও ঠিক একইভাবে বাস ভাড়া সংক্রান্ত তুচ্ছ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা বরিশালে বাস ও টার্মিনাল ভাঙচুর করছে। আমরা এমন ঘটনায় অতিষ্ঠ এবং এ ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সকল শ্রমিকরা বাস ধর্মঘট ঘোষণা করেছে।

জেলা বাস ও মিনিবাস গ্রুপের যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. ফারুক শিকদার জাগো নিউজকে বলেন, শ্রমিকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। বারবার এমন হামলার শিকার হতে হচ্ছে। এ অবস্থায় কোনো সমাধান না হলে শ্রমিকরা গাড়ি চালাতে চায় না। প্রশাসনিকভাবে বিষয়টির সমাধান দরকার। আমরা চাই যাত্রীদের ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে প্রশাসনিকভাবে এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে যারা রয়েছেন তাদের সমন্বয়ে একটি সুষ্ঠু সমাধান করা হোক।

আরএইচ/জিকেএস