ইবি অধিভুক্ত আইআইইআরে শিক্ষক নিয়োগ, ৪৫ বছরের অবহেলার অবসান
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) অধিভুক্ত ‘ইসলামিক ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ’ (আইআইইআর) প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। প্রতিষ্ঠার ৪৫ বছর পর প্রথমবার ইনস্টিটিউটটিতে শিক্ষক নিয়োগ হতে যাচ্ছে।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়কে পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা ও গবেষণা কেন্দ্রে রূপান্তর করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের সই করা এ বিজ্ঞপ্তিতে ইনস্টিটিউটে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে একজন সহকারী অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগে একজন প্রভাষক এবং একজন অফিস সহায়ক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে নির্ধারিত যোগ্যতা ও শর্ত পূরণ করে গত ২ আগস্টের মধ্যে আবেদন করেন চাকরিপ্রত্যাশীরা। বর্তমানে নিয়োগের পরবর্তী প্রক্রিয়া চলমান বলে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮০ সালের গেজেট অনুযায়ী ইসলামিক ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইআইইআর) কার্যক্রম শুরু করে। ১৯৮২ সালে এরশাদ সরকার এটিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নিয়ে আসে। প্রথমে গবেষণা, ভাষা প্রশিক্ষণ ও প্রকাশনা কার্যক্রম শুরু হয়। তবে প্রায় ১৬-১৭ বছর প্রতিষ্ঠানটি গবেষণার মূল ধারা থেকে সরে গিয়ে বিএড, এমএড ও লাইব্রেরি সায়েন্স প্রোগ্রামে সীমাবদ্ধ ছিল। ২০০৬ সালে নতুন যাত্রা শুরু হলে শিক্ষক নিয়োগের জন্য একটি বোর্ড গঠন করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে অবহেলার কারণে সেটা সিন্ডিকেটে পাশ হয়নি।

বর্তমান ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রতিষ্ঠানটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ইতোমধ্যে আলোচনা হয়েছে। দুজন শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। বিষয়ভিত্তিক গবেষক নিয়োগের জন্য ইউজিসির অনুমোদন পেলে আরও মানসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন
বাজেট সংকটে সৌন্দর্য হারাচ্ছে মীর মুগ্ধ সরোবর
একই মামলার দুই আসামি: এক শিক্ষক পেলেন পদ, অন্যজনের ছুটি স্থগিত
তিনি আরও বলেন, গবেষণায় ইসলামের সঙ্গে সম্পৃক্ত আর্টিকেল প্রকাশের যে নীতিমালা ১৭ বছর অবজ্ঞা করা হয়েছিল, তা আমরা পুনরায় চালু করেছি। আমরা নতুন সম্পাদকীয় বোর্ড গঠন করেছি এবং প্রথমবারের মতো তিন ভাষায় (বাংলা, আরবি, ইংরেজি) বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছি, যাতে দেশ-বিদেশ থেকে গবেষণা প্রবন্ধ জমা দেওয়া যায়। ড. সাইফুল ইসলাম নূরির অপ্রকাশিত দুইটি সংখ্যা প্রকাশের জন্য পাণ্ডুলিপি সংগ্রহ করা হয়েছে এবং যেসব সফট কপি নেই সেসবের লেখকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পর আমি গত মাসের ২ তারিখে পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নিই। দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটিকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা, চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা ও লাইটিং স্থাপনসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন করেছি। ইসলামী গবেষণাকে জোরদার করতে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ইতোমধ্যে এমওইউ হয়েছে এবং আরও কয়েকটির সঙ্গে আলোচনা চলছে। সবার সহযোগিতায় এটিকে একটি উচ্চতর ইসলামী শিক্ষা ও গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
ইরফান উল্লাহ/এনএইচআর/জিকেএস