মেস ভাড়া নিয়ে বিপাকে শিক্ষার্থীরা, প্রক্টরের আশার বাণী
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে মেস ভাড়া নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা। মেস কর্তৃপক্ষের ধারাবাহিক চাপের মুখে শিক্ষার্থীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তবে উপাচার্যের পরামর্শে এ বিষয়ে একটা সমাধানে আসার পদক্ষেপ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি।
করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার পর গত ১৭ ও ১৮ মার্চের মধ্যেই মেস থেকে চলে যান প্রায় সব শিক্ষার্থী। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে তারা নিজেদের বাসায় অবস্থান করছেন। সঙ্গত কারণেই তারা মেসের গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ কিছুই ব্যবহার করেননি। তবে মেস মালিকরা সবকিছুর ব্যয়সহ এপ্রিলের ভাড়া পরিশোধের জন্য বারবার তাদের তাগিদ দিচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, করোনা পরিস্থিতির উন্নয়ন না হলে আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকতে পারে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এভাবে চলতে থাকলে মেসে অবস্থান না করেই শিক্ষার্থীদের বহন করতে হবে অতিরিক্ত ৬ মাসের ভাড়া ও আনুষঙ্গিক খরচ।
মেস ছেড়ে দেয়ারও কোনো সুযোগ দিচ্ছেন না মালিকরা। এ পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের কিছুই করার থাকছে না। সারাদেশের সাধারণ মানুষের ওপর দিয়ে চরম অর্থনৈতিক সংকট গেলেও তা বুঝতে অপারগতা প্রকাশ করছেন মেস কর্তৃপক্ষ।
একাধিক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, বাড়ি থেকে নামমাত্র টাকা নিয়ে আর টিউশন করিয়ে মেস ভাড়া, আনুষঙ্গিক ও পড়াশোনার খরচ চালান তারা। এখন টিউশন নেই, বাড়ির অর্থনৈতিক অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। এদিকে মেস মালিক ভাড়ার জন্য অনবরত চাপ দিয়ে যাচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর উজ্জ্বল কুমার প্রধান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী মধ্য ও নিম্ন আয়ের পরিবার থেকে আসা। অনেকেই টিউশনিসহ পার্ট টাইম জব করে ব্যয় বহন করে। আমরা সেই বিষয়টি মাথায় রেখে সব মেস মালিকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য টিম গঠন করেছি। মাসিক ভাড়া ও আনুষঙ্গিক ব্যয় নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা হবে। শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো কিছু করতে পারলেই আমরা খুশি।
উল্লেখ্য, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় সাড়ে সাত হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে আবাসিক হল রয়েছে মাত্র দুটি। যেখানে আসন সংখ্যা মাত্র পাঁচশ। বাকি প্রায় সাত হাজার শিক্ষার্থী ময়মনসিংহ শহর এবং ক্যাম্পাস সংলগ্ন ছাত্রাবাস ও ছাত্রী নিবাসগুলোতে থাকেন। প্রায় ২২০০ আসন বিশিষ্ট দুটি আবাসিক হলের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে হওয়ায় এখনও চালু হয়নি বলে মেসগুলোতে থাকতে হয় শিক্ষার্থীদের।
এছাড়া এসব মেস মালিকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে হঠাৎই ভাড়া বৃদ্ধি, নিরাপত্তাহীনতাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে শিক্ষার্থীদের।
আহসান হাবীব/এমএসএইচ/এমকেএইচ