বিনা সুদে ঋণ পাচ্ছে খুবির অসচ্ছল শিক্ষার্থীরা
করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ঋণ দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯টি ডিসিপ্লিনের ১৪ জন করে মোট ৪০৬ জন শিক্ষার্থী পাঁচ হাজার টাকা করে এই ঋণ পাবেন। সম্পূর্ণ বিনা সুদে শিক্ষা মেয়াদের মধ্যে শিক্ষার্থীরা তা পরিশোধ করার সুযোগ পাবেন।
বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক প্রধানদের সঙ্গে এক ভিডিও কনফারেন্স শেষে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরবর্তীতে রাত সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ভিডিও কনফারেন্সে এ পদক্ষেপের কথা জানান উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান।
তিনি বলেন, অসচ্ছল শিক্ষার্থী যাদের প্রয়োজনীয় ডিভাইস এবং ইন্টারনেট প্যাকেজ ক্রয়ের যথেষ্ট সামর্থ্য নেই, তাদের জন্য বিনা সুদে শিক্ষা ঋণ দেয়া হবে। শিক্ষার্থীদের এ সুবিধা প্রদানের বাইরে স্ব-স্ব ডিসিপ্লিন থেকে শিক্ষকবৃন্দ এবং এলামনাইদের সহযোগিতায় অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা যাতে ঘরে বসেই চিকিৎসা সুবিধা পেতে পারে সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার থেকে ২৪ ঘণ্টা টেলিমেডিসিন সুবিধা কার্যকর হয়েছে বলেও জানান উপাচার্য।
ভিডিও কনফারেন্সে তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে ল্যাপটপ নেই এমন শিক্ষকদেরকে বিনা সুদে তা ক্রয়ে ঋণ প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এবং এ প্রক্রিয়ায় ঋণ বিতরণ শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থীদের স্ব-স্ব ডিসিপ্লিন থেকে তালিকা পাওয়ার পর ঈদের পর পরই শিক্ষা ঋণ চালু করা যাবে।
এছাড়া অনলাইনে থিসিস জমাদান, ডিফেন্স গ্রহণ এবং তা মূল্যায়নে বোর্ড অব অ্যাডভান্সড স্টাডিজ এবং একাডেমিক কাউন্সিলের যুগান্তকারী সুপারিশ সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ২০৬তম সভায় অনুমোদনের কথাও জানান উপাচার্য। একই সিন্ডিকেটে করোনা পরীক্ষাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে সংশ্লিষ্ট বহুমুখী গবেষণা সুবিধার লক্ষ্যে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি স্বতন্ত্র অত্যাধুনিক আরটি-পিসিআর ল্যাব স্থাপনের প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে গত তিন মাসে একাডেমিক প্রধানদের সঙ্গে কয়েক দফা ভিডিও কনফরেন্সে আলাপ করেন উপাচার্য। এসব সভায় অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সুবিধা-অসুবিধার বিষয় ধারণা পেতে জরিপও চালানো হয়।
এতে দেখা যায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শতাংশের কিছু শিক্ষার্থীর অ্যানড্রয়েড ফোন সেট নেই এবং ছয় শতাংশের কিছু বেশি শিক্ষার্থীর বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সুবিধা নেই। অনেকের থাকলেও তা দুর্বল ও নিরবচ্ছিন্ন নয়। শিক্ষার্থীদের নিরবচ্ছিন্ন ও কম মূল্যে ইন্টারনেট সুবিধা প্রদানে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও নানাভাবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে।
আরএআর/পিআর