শাহবাগে আটকদের মুক্তির দাবিতে সহপাঠীদের মানববন্ধন

কারাগারে লেখক মুশতাকের মৃত্যুর প্রতিবাদে গত শুক্রবার বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের মশাল মিছিল থেকে আটকদের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে তাদের সহপাঠীরা।
রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ‘জেলের তালা ভাঙব, বন্দিদেরকে আনব’ ব্যানারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এ সময় তারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার শ্রমিক নেতা রুহুল আমিনের মুক্তি দাবি করেন।
মানববন্ধনে পুলিশ ঢাবি ক্যাম্পাস থেকে কীভাবে শিক্ষার্থীদের আটক করে সে প্রশ্ন তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তায় নিয়োজিত প্রক্টরিয়াল টিমের নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদ জানানো হয়।
আটকদের সহপাঠী ছাত্র ইউনিয়নের কর্মী কাজী রাকিব বলেন, জামিন একটি আইনি অধিকার। প্রত্যেক আসামিই জামিন পাওয়ার অধিকার রাখে। শিকদার-হারিসদের জামিন দেয়া হলেও আমাদের বন্ধুদের, লেখক মুশতাকদের জামিন হয় না। আমরা লেখক মুশতাক ‘হত্যার’ বিচার জনগণের কাছে দাবি করছি।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের কর্মী রবিউল ইসলাম মীম বলেন, সারাদেশে একের পর এক ব্যাংক লুট করা হচ্ছে। এই ব্যাংক চোরদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা ও বিচার হয় না। আর যারা এই ব্যাংক চোরদের বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লেখেন তাদেরকে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়।
তিনি বলেন, আওয়ামী শাসনাধীন রাষ্ট্র গণবিরোধী। এই সরকারের উচ্ছেদ ব্যতীত এই সমস্যার সমাধান হবে না। আমাদেরকে লড়তে হবে, আমরা আমাদের ভাইদের মুক্ত করবো। এজন্য আমাদের সংগ্রাম জোরদার করতে হবে। এ সময় তিনি সবাইকে তাদের সংগ্রামে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানান।
বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর কর্মী জাবির আহমেদ জুবেল বলেন, যাদের সঙ্গে আমরা একসঙ্গে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি তারা আজ কারাগারে বন্দি। আমাদের বন্ধুদের যখন পুলিশ হামলা করে, তখন ক্যাম্পাসের প্রক্টরিয়াল টিম কোনো ভূমিকা পালন করেনি। প্রক্টরিয়াল টিম আমাদের কোনো রকম নিরাপত্তা দেয়নি। পুলিশ আমাদের বন্ধুদের আটকে রাখতে পারবে না। আমরা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখব।
অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র মোনায়েম আল আজাদ বলেন, সংবিধানে চারটি মূলমন্ত্রের একটি হলো গণতন্ত্র। আর এই গণতন্ত্রের মূল বিষয় মত প্রকাশের স্বাধীনতা। সেই স্বাধীনতা আজ বাংলাদেশে নিশ্চিত না। পুলিশ ক্যাম্পাসে ঢুকে আমার ভাইদের মারল। আর প্রক্টরিয়াল টিম ছাত্রদের নিরাপত্তা দেয়নি। শিক্ষার্থীদের পক্ষে দাঁড়ানোর প্রয়োজনও তারা বোধ করেননি। আমরা এই অথর্ব প্রশাসনের নিন্দা জানাই।
মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড এ কে এম গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সময় প্রক্টরিয়াল টিমের নিষ্ক্রিয়তায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে প্রক্টর জাগো নিউজকে বলেন, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন প্রতিবাদ-আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কখনো শিক্ষার্থীদের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেনি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের এই উদারতাকে যেন কেউ অন্যভাবে ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়কে সব কিছুতে জড়ানোর চিন্তা-ভাবনা না করে, সেটা কারো জন্য কল্যাণকর নয়। সুতরাং যে পক্ষই এখানে জড়িত থাকুক, উভয় পক্ষের কাছে সংযত আচরণ ও শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখার জন্য আমরা অনুরোধ জানাবো।
আল সাদী/এআরএ/এমকেএইচ