ছাত্রদলকে ক্ষমা চেয়ে ক্যাম্পাসে আসতে হবে: ছাত্রলীগ সভাপতি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ছাত্রদল যে ‘ধৃষ্টতা’ দেখিয়েছে সেজন্য তাদের ক্ষমা চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়। এদিকে ছাত্রদলকে শক্তহাতে দমন করার ঘোষণা দিয়েছেন সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।
রোববার (২৯ মে) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন।
আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে যারা ধৃষ্টতা দেখিয়েছে তাদের ক্ষমা চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে হবে। অন্যথায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিহত করবে এবং ছাত্রলীগ সবসময় তাদের পাশে থাকবে।
জয় আরও বলেন, শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তি করলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বসে থাকবে না। কারণ তিনি শুধু দলীয় পরিচয়ে সীমাবদ্ধ নন, সব স্তরের মানুষের কাছে জনপ্রিয়। অবৈধ ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে খুনি জিয়াউর রহমান ছাত্রদল গঠন করে টাকা ও অস্ত্র হাতে তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু শেখ হাসিনা বই-খাতা তুলে দিয়েছেন। কারণ বই-খাতা হলো সেই হাতিয়ার যার মাধ্যমে অস্ত্রকে নিবারণ করা যায়।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে জয় বলেন, আপনারা (সাংবাদিক) ভুলে যাবেন না বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতি নষ্ট করেছে বিএনপি। দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বিএনপি। শিবিরকে নিয়ে রগ কাটার রাজনীতি করেছে বিএনপি। আজ আরামে আছেন তাই অনেক কিছু ভুলে গেছেন। খুনি জিয়াউর রহমানের হাত ধরে খালেদা জিয়াও ছাত্রদলের হাতে টাকা আর অস্ত্র তুলে দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, আপনারা আমাদের খারাপ দিকগুলো জাতির সামনে তুলে ধরবেন কিন্তু অসত্য তথ্য, মিথ্যা তথ্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করবেন না। জেনেশুনে নিউজ করুন।
ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, সুস্থ হওয়ার পরও অনেক ছাত্রদল নেতাকর্মী হাসপাতালে আছেন কারণ সেখানে তারেক রহমান অহি পাঠায়, টাকা পাঠায়। আর সেই টাকা নিয়ে এসি রুমে তারা সেখানে থাকে। সেখানে দেখলাম শিবির সভাপতি গিয়েও অবস্থান করছে, দেখা করতে গেছে তাহলে আমরা বুঝে যাই তাদের উদ্দেশ্য কী! তারা ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করতে চায়। সেশনজটবিহীন ক্যাম্পাসে পরিণত হওয়ায় তাদের মাথা খারাপ।
মানববন্ধনে লেখক ভট্টাচার্য বলেন, বিগত কিছুদিন ধরে অছাত্র এবং আদুভাইদের সংগঠন— ছাত্রদলের নতুন কমিটি হওয়ার পর তারা ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা শুরু করেছে। ছাত্রদল সভাপতি কিছুদিন আগে ঔদ্ধত্যমূলক বক্তব্য ও উসকানিমূলক স্লোগান দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ইমোশনে আঘাত করেছে। শিক্ষার্থীদের মনে কষ্ট দিয়ে বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তার মাধ্যমে তারা ক্যাম্পাসে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে চায়।
তিনি বলেন, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতারা প্রেস ক্লাবের সামনে তাদের বক্তব্যের মাধ্যমে ধৃষ্টতার সীমা লঙ্ঘন করে বলেছে, ’৭৫-এর হাতিয়ার দরকার হলে আবার তাদের হাতে গর্জে উঠবে। তাদের এই বক্তব্যে প্রমাণিত হয় যে ’৭৫-এ খুনি জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড হয়েছিল। এত বছর পর এসে ছাত্রদলের কুলাঙ্গাররা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতার এই বাণীকে সত্য বলে বিচার করছে। এরই মাধ্যমে তারা বাংলাদেশে হত্যা ও খুনের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করার পাঁয়তারা করছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ শক্তহাতে তাদের (ছাত্রদলকে) দমন করবে। বাংলাদেশের সব ছাত্রসমাজ তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলে এই অছাত্র ও চাচ্চু বাহিনীকে সারাদেশের প্রত্যেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বিতাড়িত করবে।
মানববন্ধনে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন হল, ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, হোম ইকোনমিকস কলেজসহ রাজধানীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ছাত্রলীগের সহস্রাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
আল সাদী ভূঁইয়া/বিএ/এমএস