শিক্ষার্থী-সাংবাদিক-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় ডুজার প্রতিবাদ
সারাদেশে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর হামলা, শিক্ষার্থীদের প্রাণহানি, গণগ্রেফতার, হয়রানি ও নাগরিকদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (ডুজা)।
একই সঙ্গে বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরে প্রবেশ করে বহিরাগতদের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের জোর দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
শুক্রবার (২ আগস্ট) ডুজার সভাপতি আল সাদী ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহি এক যৌথ বিবৃতিতে এসব দাবি জানান।
নেতারা বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে হামলার শিকার হয়ে এখন পর্যন্ত চারজন সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন। তারা হলেন, ঢাকা টাইমসের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক হাসান মেহেদী, দৈনিক নয়া দিগন্তের সিলেট ব্যুরো প্রধান এটিএম তুরাব, ফ্রিল্যান্স ফটো সাংবাদিক তাহির জামান প্রিয় এবং দৈনিক ভোরের আওয়াজ পত্রিকার গাজীপুরের গাছা থানা প্রতিনিধি মো. শাকিল হোসেন। এছাড়া পুলিশের ছোড়া ছররা গুলিতে ৩৫ এবং গুলি ও হামলার শিকার হয়ে ২৩০ জন গণমাধ্যমকর্মী আহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে ৬৮ জনের অবস্থা গুরুতর।
- আরও পড়ুন:
রোববার থেকে সর্বাত্মক অসহযোগের ডাক শিক্ষার্থীদের
ছুটির দিনে দেশের বিভিন্ন আদালতে ৭৮ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর জামিন - বাংলাদেশে সহিংসতায় ৩২ শিশুর মৃত্যু: ইউনিসেফ
তারা আরও বলেন, ‘বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকরাও হামলার শিকার হয়েছেন। এছাড়া কয়েকজন সাংবাদিককে গ্রেফতারের ঘটনাও ঘটেছে। আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, প্রতিনিয়ত দেশব্যাপী সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাংবাদিকরা সত্য প্রকাশের মাধ্যমে দেশ, সমাজ ও গণমানুষের কল্যাণে বস্তুনিষ্ঠতার সঙ্গে কাজ করে থাকেন। কিন্তু তাদের ওপর বারবার হামলার মাধ্যমে গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং সংবিধানস্বীকৃত গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ধারণার পরিপন্থী।’
ডুজার নেতারা বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সারা দেশে ২৬৬ জন নিহত হয়েছেন বলে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) গত ৩১ জুলাই প্রকাশিত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এতে উল্লেখ করা হয়, এ পর্যন্ত আহত হয়েছেন অন্তত ৭ হাজার ৭৩০ জন। এছাড়া, ৭৯৮টি মামলা হয়েছে। যার মধ্যে ২০০ মামলায় ২ লাখ ১৩ হাজারের বেশি আসামি করা হয়েছে এবং ১০ হাজার ৩৭২ জনেরও বেশি লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে। হয়রানি, বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি এবং সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই গণগ্রেফতারের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এমনকি শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদেরও বিভিন্নভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে।
সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ডুজার নেতারা বলেন, সারাদেশে নিহত সাংবাদিকদের ক্ষতিপূরণ, আহতদের সুচিকিৎসা এবং গ্রেফতারকৃতদের অতি দ্রুত মুক্তি দিতে হবে ও মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। তাদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
এমএইচএ/এসএনআর/জেআইএম