আইসোলেশনে মারা যাওয়া সেই নারী করোনায় আক্রান্ত ছিলেন না
সিলেটে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে থাকাবস্থায় মারা যাওয়া যুক্তরাজ্যফেরত সেই নারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন না। তার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। নিহত ওই নারী গত ৪ মার্চ যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরেন।
তিনি সিলেট নগরের শামীমাবাদ আবাসিক এলাকায় থাকতেন। তিনি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার সাতহাল গ্রামের সোহরাব আলীর স্ত্রী। বিষয়টি সোমবার দিনগত মধ্যরাতে নিশ্চিত করেছেন আইইডিসিআর-এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ এস এম আলমগীর।
এর আগে ১০ দিন ধরে জ্বর, সর্দি, কাশির সঙ্গে শাসকষ্টে ভোগার পর গত ২০ মার্চ লন্ডনফেরত ওই নারীকে সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি করা হন। এরপর রোববার দিনগত ভোররাতে হাসপাতালের আইসোলেশনে থাকা অবস্থায় ৬১ বছর বয়সও ওই নারী মারা যান।
পরে ওই দিনই প্রবাসী ওই নারীর মুখের লালাসহ মরদেহ থেকে আলামত সংগ্রহ করে আইইডিসিআর। এরপর সিলেট সিটি করপোরেশনের কবরস্থানে (মানিকপীর টিলা) তাকে সিলেটের সিভিল সার্জনের উপস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার করোনা নির্দেশনা ও সরকারের সংক্রমণবিধি অনুযায়ী দাফন করা হয়।
একই সাথে মারা যাওয়া সেই নারীর পরিবারের সবাইকে বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠায় জেলা প্রশাসন। এরপর রোববার বিকেলেই নিহতের পরিবারের সদস্যরা সিলেটের বাসা তালা দিয়ে সবাই পালিয়ে যান।
এদিকে, করোনাভাইরাস আতঙ্কে চিরচেনা ব্যস্ত নগর সিলেটের এখন রাস্তাঘাট এখন ফাঁকা। ৪-৫ দিন আগের সিলেট আর এখনকার সিলেট নগরের সাথে মোলানো যাচ্ছে না। এ যেন এক অচেনা নগর। সন্ধ্যার পর নগরের প্রধান প্রধান সড়কগুলো ঘুরে দেখা গেছে, পুরো নগরই ফাঁকা, যানজটে নাখাল এই নগরে আজ যেন সড়কে মানুষ খুঁজেও পাওয়া যাচ্ছিল না।
এদিকে, সিলেটে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাস সন্দেহে পাঁচজনকে শহীদ শামছুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এরমধ্যে রোববার রাত ৮টা থেকে সোমবার রাত ৮টা পর্যন্ত) একজনকে হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে কোয়ারেন্টাইন করে রাখা হয়েছে।
আর বিগত ২৪ ঘণ্টায় হোম কোয়ারেন্টাইন করে রাখা হয়েছে আরও ২৪ জনকে। সব মিলিয়ে গত ১০ মার্চ থেকে সিলেট জেলায় ৮০০ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইন করে রাখা হয়েছে। বেশিরভাগই প্রবাসী ও তাদের আত্মীয়-স্বজন।
এদের মধ্যে ১৭ জনের হোম কোয়ারেন্টাইনে মেয়াদ অর্থাৎ ১৪ দিন শেষ হওয়ায় তাদের ছাড়পত্র দেয়া হয় বলে জানিয়েছেন সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মণ্ডল। তিনি জানান, যারাই হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন তাদেরকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া যারা হোম কোয়ারেন্টাইনের মেয়াদ শেষ করেছেন তাদেরকে ছাড়পত্র দিয়ে দেয়া হয়েছে। আর যারা নিয়ম মেনে হোম কোয়ারান্টাইনে থাকবেন না তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নেবে।
ছামির মাহমুদ, সিলেটে/এমআরএম