করোনাজয়ী নার্স ও রিকশাচালককে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায়
খুলনার করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন দুজন। এদের মধ্যে একজন হলেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স শীলা রানী দাস এবং অন্যজন দৌলতপুর উপজেলার মহেশ্বর পাশা কালিবাড়ি এলাকার বিষ্ণু হাজরা।
শনিবার (৯ মে) দুপুর ১টার দিকে করোনা চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট সিনিয়র চিকিৎসকরা ফুল, ফল ও স্বাস্থ্যসেবা গাইড লাইন দিয়ে তাদের বিদায় দেন।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স শীলা রানি দাস খুলনার করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে নার্সিং সুপারভাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেখানে করোনা আক্রান্ত খুমেকের তিনজন শিক্ষককে সেবা করার সময় তিনিও করোনা আক্রান্ত হন। দায়িত্ব পালন শেষে সিএসএস আভা সেন্টারে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকার সময় উপসর্গ দেখা দিলে গত ২৮ এপ্রিল শীলা দাসের করোনা পরীক্ষা করা হয় এবং পজিটিভ আসে।এরপর থেকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
এদিকে নগরীর দৌলতপুর মহেশ্বরপাশা কালিবাড়ি এলাকার রিকশাচালক বিষ্ণু হাজারা বেশ কয়েকদিন ধরে জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফ্লু-কর্নারে চিকিৎসা নিতে এলে উপসর্গ দেখে তার করোনা পরীক্ষা করান দায়িত্বরত চিকিৎসকরা। পরদিন তার পজিটিভ এলে তাকেও নুরনগরে করোনা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
গত ৭ এবং ৮ মে পরপর দুইদিন করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসায় তাদের করোনামুক্ত সনদ দিয়ে হাসপাতাল থেকে বিদায় দেয়া হয়। বিদায়কালে তাদের ফুল, ফল, ও চিকিৎসা গাইডলাইনের পাশাপাশি হাততালি দিয়ে অভিনন্দন জানানো হয়।
করোনা হাসপাতাল কমিটির আহ্বায়ক ডা. মো. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, করোনাযুদ্ধে বিজয়ী এই দুই যোদ্ধাকে অভিনন্দন জানানো হয়। তাদের পরপর দুইবার করোনা টেস্টে নেগেটিভ আসার ফলাফল শিট এবং হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থাসহ ছাড়পত্র দেয়া হয়। এখন থেকে তাদের ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
করোনা থেকে মুক্ত হয়ে শীলা রানি দাস জানান, হাসপাতালে করোনা রোগীদের সেবা করতে এসে আক্রান্ত হয়েছিলাম। কিন্তু চিকিৎসকের গাইডলাইন মেনে চলেছি। ইশ্বরের কৃপায় সুস্থ হয়েছি। আশাকরি খুব শিগগিরই আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে করোনা চিকিৎসায় শামিল হতে পারবো।এসময় সবাইকে বাসায় থাকার পরামর্শ দেন তিনি।
এসময় করোনা চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সার্বিক সমন্বয়কারী ডা. মেহেদী নেওয়াজ, সদস্য সচিব ডা. খসরুল আলম মল্লিক, খুমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুন্সি রেজা সেকেন্দার, মানসিক স্বাস্থ্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. ফরিদ আহমেদ, শিশু সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. জুলকার নাইম, খুমেক হাসপাতালের আরএমও ডা. মিজানুর রহমান, ফ্লু কর্নারের মুখপাত্র ডা. শৈলেন্দ্রনাথ বিশ্বাস উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে খুলনায় করোনা আক্রান্ত একজন সুস্থ হয়েছিলেন। যেহেতু তিনি বাড়িতে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন তাই তাকে আর আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানানো হয়নি। এই দুইজনকে প্রথম আনুষ্ঠানিক বিদায় দেয়া হলো।
আলমগীর হান্নান/এমএএস