করোনা নিয়েই সন্তান জন্ম দিলেন গৃহবধূ
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েও কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন নীলফামারী শহরের সবুজপাড়া মহল্লার এক গৃহবধূ (২২)। মঙ্গলবার (১২ মে) রাতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি।
বুধবার (১৩ মে) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর মেডিকেল কলেজের পরিচালক ডা. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, মা ও সন্তান দুইজনেই ভালো আছেন। নবজাতকের করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হবে। করোনায় আক্রান্ত হলেও মায়ের শারীরিক অবস্থা ভালো আছে।
গৃহবধূর পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রায় চার বছর আগে পঞ্চগড়ের ভাউলাগঞ্জ এলাকার এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে হয় ওই নারীর। বিয়ের পর এটাই তাদের প্রথম সন্তান। স্বামী কৃষিকাজ করেন। গর্ভে সন্তান আসার কিছুদিন পর স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি নীলফামারী আসেন ওই গৃহবধূ। এরই মধ্যে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। কয়েকদিন আগে করোনা উপসর্গ দেখা দিলে তার নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। গত রোববার নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে করোনা পজিটিভ আসে গৃহবধূর।
চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ১৭ মে সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা থাকলেও করোনা শনাক্ত হওয়ায় সোমবার বিকেলে নীলফামারী থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। এরপর মঙ্গলবার রাতে সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি।
নীলফামারীর সিভিল সার্জন ডা. রনজিৎ কুমার বর্মন বলেন, ওই অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে আমলে নেয়া হয়। যোগাযোগ করা হয় রংপুর মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে। এরপর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরকারি খরচে ১১ মে বিকেলে ওই গৃহবধূ ও তার মাকে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বুধবার দুপুরে মুঠোফোন ওই গৃহবধূ জানান, পেটে সন্তান রেখে করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়ায় চোখে মুখে অন্ধকার দেখছিলাম। কি হবে জানতাম না। এরপর সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে চিকিৎসকদের সহায়তায় সিজারের মাধ্যমে কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। আমার বিয়ের প্রথম সন্তান এটি। সন্তানসহ আমি ভালো আছি। এজন্য নীলফামারীর সিভিল সার্জন ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তার এবং নার্সদের ধন্যবাদ জানাই।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. নুরুন্নবী লাইজু বলেন, মঙ্গলবার রাতে রংপুর মেডিকেল কলেজের হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে সফলতার সঙ্গে সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। এতে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন গৃহবধূ। মা ও মেয়ে দুইজনই সুস্থ আছে।
জিতু কবীর/এএম/পিআর