কোয়ারেন্টাইনে থেকেও বাজার-রান্না করতে হচ্ছে আনসার সদস্যদের!
বিভাগের আট জেলার মধ্যে করোনাভাইরাসের হটস্পট হয়ে উঠেছে রংপুর। ইতোমধ্যে এ জেলায় রোববার (১৭ মে) পর্যন্ত ২১৫ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে রংপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকায়ই প্রায় দেড় শতাধিক করোনা রোগী রয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে পুলিশ, ব্যাংক কর্মকর্তা, চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ আনসার সদস্যের সংখ্যাই বেশি। গত এক সপ্তাহে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আনসার ক্যাম্পের ৬০ সদস্যের মধ্যে ১৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এদিকে অধিকাংশ আনসার সদস্য কোয়ারেন্টাইনে থাকলেও খাবারের প্রয়োজনে বাইরে গিয়ে বাজার করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আনসার ক্যাম্পের সদস্যরা তিনটি রুমে ৬০ জন গাদাগাদি করে অবস্থান করছিলেন। এর মধ্যে দুটি রুমে ২৫ জন করে এবং একটিতে ছিলেন ১০ জন। করোনা পরিস্থিতিতে হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে গত ১১ মে প্রথম একজন আনসার সদস্যের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। এরপর ১২ মে দুইজন, ১৪ মে তিনজন এবং ১৫ মে ১০ জনের করোনা ধরা পড়ে। আক্রান্ত ১৬ জনের মধ্যে দিনাজপুর জেলার দুইজন নমুনা দিয়েই নিজ বাড়িতে চলে যান এবং ১৪ জন রংপর ডেডিকেটেড করোনা আইসোলেশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকি সদস্যদের মধ্যে ছয়জন হাসপাতালের আনসার ক্যাম্পে আছেন এবং ২৫ জনের মত সদস্য হাসপাতালের একটি ৫ তলা ভবনে কোয়ারেন্টাইন পালন করছেন।
অন্যরা নিজ নিজ বাড়িতে চলে গেছেন।
বর্তমানে ক্যাম্পে অবস্থানরত ছয়জনের নমুনার ফলাফল এখানও আসেনি। এছাড়া অন্যদের নেগেটিভ ফলাফল এসেছে। তবে সাতদিন পর আবারও নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হবে। সেই সময় পর্যন্ত তাদেরকে কোয়ারেইন্টাইন পালনের নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক আনসার সদস্য জানান, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি ভবনে কোয়ারেন্টাইন পালন করছেন ২৫-২৬ জন আনসার সদস্য। সেখানে এক একটি রুমে চারজন ও দুইজন করে অবস্থান করছেন। তবে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কোয়ারেন্টাইন পালন করলেও খাবারের প্রয়োজনে তাদেরকে বাইরে যেতে হচ্ছে। বাজার থেকে প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে ঘরে এনে রান্না করে খাচ্ছেন তারা। এতে করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। এজন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ভুক্তভোগী আনসার সদস্যরা।
তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আনসার ক্যাম্পের প্লাটুন কমান্ডার ফয়জার রহমান বলেন, ভবনের বাইরে একজন সুস্থ সদস্য আছেন। তিনিই সকলের বাজার করে দেন। কোয়ারেন্টাইনে থাকা আনসার সদস্যদের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। যথাযতভাবে তাদের কোয়ারেন্টাইন পালন করা হচ্ছে।
জিতু কবীর/আরএআর/পিআর