সিলেটে করোনা উপসর্গ নিয়ে ২ জনের মৃত্যু, নতুন আক্রান্ত ৯৯

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক সিলেট
প্রকাশিত: ০৮:২৪ এএম, ০১ জুন ২০২০

করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন সেন্টারে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে নগরের দরগাহ মহল্লার বাসিন্দা সৈয়দ গোলাম মুহিত (৫৫) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে রোববার (৩১ মে) বিকেল ৫টার দিকে। তিনি শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগ নিয়ে হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। করোনায় মৃত্যু হয়েছে এমন ধারণা থেকে রোববার মধ্যরাতেই তাকে দাফন করা হয়। অপর ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে রাতে।

রাত সাড়ে ১২টায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালটির আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. সুশান্ত কুমার মহাপাত্র। তিনি বলেন, ‘মৃত দুইজনের মধ্যে একজনের করোনা ছিল বলে আমাদের সন্দেহ। তাই তাকে রাতেই মানিক পীরের টিলায় দাফন করা হয়েছে। অন্যজনের মৃত্যু বার্ধক্যজনিত রোগে হয়েছে বলে আমাদের ধারণা। তাই তার লাশ আজ (সোমবার) সকালে দাফন করা হবে।’

মৃত দুজনেরই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে জানিয়ে ডা. সুশান্ত কুমার মহাপাত্র বলেন, ‘নমুনা পরীক্ষা হলেই নিশ্চিত হওয়া যাবে তারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন কি না। তবে দুজনেরই দাফন সংক্রামণবিধি অনুযায়ী হবে।

এর আগে রোববার সকাল ১০টার দিকে সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে করোনায় মারা যান বিয়ানীবাজার উপজেলার মুড়িয়া ইউনিয়নের তাজপুর (মাজারপট্টি) গ্রামের তমছির আলী (৭৫)। নামাজে জানাজা শেষে রোববার বিকেল ৪টায় গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইড লাইন অনুযায়ী তাকে দাফন করা হয়েছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, তমছির আলীর শরীরে কয়েকদিন থেকে করোনার উপসর্গ দেখা যায়। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তিও পর শনিবার রাত ১টার দিকে তার করোনার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। রিপোর্টপ্রাপ্তির পর তাকে সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে নেয়া হয়। কয়েক ঘণ্টা পর রোবরার সকালে তিনি মারা যান। করোনায় আক্রান্ত হয়ে রোববার সকাল পর্যন্ত সিলেট জেলায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। তমছির আলীকে নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৪ জনে। আর সিলেট বিভাগে করোনায় মোট মারা গেছেন ১৮ জন।

এদিকে রোববার একদিনে সিলেট বিভাগে ৯৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে সিলেট বিভাগে করোনা রোগীর সংখ্যা এক হাজার ছাড়াল।

আক্রান্তদের মধ্যে র্যাবের ১৬ সদস্যসহ পুলিশ এবং স্বাস্থ্যকর্মীও রয়েছেন। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ২২ জন, মৌলভীবাজারে ৩০ জন, হবিগঞ্জে ২৬ জন ও সুনামগঞ্জ জেলায় ১৬ র্যাব সদস্যসহ ২১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সবমিলিয়ে সিলেট বিভাগে করোনা রোগীর সংখ্যা এক হাজার ৪৬জন।

সিলেট জেলায় আরও ২২ জন করোনারোগী শনাক্ত হয়েছেন। রোববার ওসমানী মেডিকেল কলেজের আরটি-পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় তারা শনাক্ত হন। আক্রান্ত সিলেটের চারটি উপজেলার বাসিন্দা।

ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় জানান, রোববার ওসমানীর ল্যাবে ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তন্মধ্যে ২২ জন করোনা পজিটিভ বলে শনাক্ত হন।

নতুন আক্রান্তদের মধ্যে সিলেট সদর উপজেলার ১০ জন, জৈন্তাপুরের ৭ জন, দক্ষিণ সুরমার ৪ জন ও গোলাপগঞ্জ উপজেলার একজন রয়েছেন। এ নিয়ে সিলেট জেলায় করোনারোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৬৫ জনে।

এদিকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে সুনামগঞ্জের ২১ জনের করোনা ধরা পড়েছে। একইদিন মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে আরও ৫৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সিলেট স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

রোববার রাতে ঢাকা থেকে তাদের করোনার পজিটিভ রিপোর্ট আসে। তিনি জানান, গত শুক্র ও শনিবার এ দুই জেলার রিপোর্ট আসেনি। রোববার আইইডিসিআর থেকে একসাথে ৫৬ জনের পজিটিভ রিপোর্ট আসে। ঢাকায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টার থেকে দুটি ইমেইল আসে। মেইলের একটিতে ২৪ জন এবং আরেকটিতে ৩২ জন পজিটিভ মর্মে উল্লেখ করা হয়।

রোববার সকাল পর্যন্ত হবিগঞ্জ জেলায় ১৭১ জন এবং মৌলভীবাজার জেলায় ৯৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়। নতুন আক্রান্ত মিলিয়ে এ দুই জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়ল।

ছামির মাহমুদ/বিএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।