শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবিতে রাস্তায় সিলেটের শিক্ষার্থীরা

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়াসহ কয়েক দফা দাবিতে সিলেটে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এ সময় নগরজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নগরের বন্দরবাজার-আম্বরখানা সড়কের চৌহাট্টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে তারা সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতি দাবি জানান।
এর পরপরই তারা হঠাৎ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। প্রায় এক ঘণ্টা চৌহাট্টায় সড়ক অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী এতে অংশ নেন।
এ সময় তারা ওই সড়ক দিয়ে সবধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়ে স্লোগান দেন। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় নগরীর চৌহাট্টাস্থ সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সিলেটের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। এ সময় তারা প্রায় এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন এবং স্লোগানে স্লোগানে তাদের দাবি জোরালোভাবে তুলে ধরেন।
মানববন্ধন থেকে শিক্ষার্থীরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলমান মাস্টার্সসহ সকল পরীক্ষার স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার এবং স্বাস্থ্যসুরক্ষা মেনে দ্রুত সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ছাত্রাবাস খুলে দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান।
এ সময় ‘জেগেছেরে জেগেছে- ছাত্রসমাজ জেগেছে, লেগেছেরে লেগেছে- রক্তে আগুন লেগেছে’ স্লোগানে স্লোগানে সিলেট নগরের চৌহাট্টা পয়েন্ট পুরোপুরি বন্ধ করে দেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। খবর পেয়ে বেলা ১টায় সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার আজবাহার আলী শেখসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছেন এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের শান্ত করেন। পরে বেলা দেড়টার সময় শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন।
পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল সহকারে সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রণালয় বরাবরে স্মারকলিপি দেন।
অবরোধ ও মানববন্ধন চলাকালে এমসি কলেজ গণিত বিভাগের মাস্টার্স পরীক্ষার্থী আব্দুর রহিমর সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন- নিন্টু মালাকার, দোয়েল রায়, শ্যামলী দাস, গোলাম কিবরিয়া, সৈয়দ আকমল হোসাইন, মো. হোসাইন, শাহ রোকনুজ্জামান রোখন, সৈকত ভৌমিক, তানজিনা বেগম, সাগর আহমদ, আব্দুল্লাহ আল তুহিন।
একেএম জুমায়েল বক্স, মনিরা ইয়াছমিন, আব্দুল্লাহ আল শাহেদ, এনামুল ইমাম, উমা সরকার, আরএস শাওন, দেবল পাল, ফারজানা খানম জেবিনসহ আরো শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, করোনাভাইরাসের মধ্যে যেখানে সারা দেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক সভা থেকে শুরু করে খেলাধুলা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এমন কি জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হচ্ছে সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে দেশের শিক্ষাখাতকে ধ্বংস করার পায়তারা হচ্ছে। বক্তারা অবিলম্বে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া না হলে সারা দেশের শিক্ষার্থীদের নিয়ে কঠোর আন্দোলনের হুমকি দেন।
রাজধানীর শাহবাগ ও চট্টগ্রামে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশের হামলা ও গ্রেফতারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে গ্রেফতার শিক্ষার্থীদের মুক্তি দাবি করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
একই দাবিতে আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি শনিবারের মধ্যে তাদের দাবি না মানা হলে শনিবার বেলা ১১টায় সিলেট নগরের চৌহাট্টা পয়েন্টে অবস্থান কর্মসূচি, প্রতীকী পরীক্ষা পালন করার ঘোষণা দেয়া হয় বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের আয়োজনে এ আন্দোলনে সিলেটের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। এছাড়া মানববন্ধন ও বিক্ষোভে এমসি কলেজ, দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজ, সিলেট সরকারি কলেজ, মদন মোহন কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ, মঈনউদ্দিন আদর্শ মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
ছামির মাহমুদ/এমআরএম/জিকেএস