হাতুড়িপেটায় গৃহবধূকে হত্যা, ভাড়াটে খুনিসহ স্বামী গ্রেফতার

বরিশালের আগৈলঝাড়ায় সন্তানের সামনে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রাশিদা বেগম (৩৫) নামের এক গৃহবধূকে হত্যার ঘটনায় ভাড়াটে খুনি মো. রুবেলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার সীমান্তবর্তী বেদগ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার ভোরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে একই এলাকা থেকে নিহত রাশিদা বেগমের স্বামী তামিম শেখকেও গ্রেফতার করে।
নিহত রাশিদা বেগম আগৈলঝাড়ার নগড়বাড়ি গ্রামের মৃত করিম শাহের মেয়ে। গোপালগঞ্জ জেলার বেদগ্রামের আনোয়ার শেখের ছেলে তামিমের সঙ্গে দুই বছর আগে রাশিদার বিয়ে হয়।
নিহতের স্বজনরা জানান, এটা রাশিদা ও তামিমের দ্বিতীয় বিয়ে। তামিমের আগে স্ত্রীর দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। অন্যদিকে রাশিদার ঘরে ১০ মাস বয়সী তানিম নামের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে বুধবার দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে রাশিদা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করেন। ওই সময়ে কান্নার শব্দ শুনে সড়কের পাশে রাশিদার ছেলে তানিমকে পড়ে থাকতে দেখতে পান। তাকে উদ্ধার করে রাশিদার স্বজনদের কাছে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় রাতেই নিহতের ভাই আলামিন শাহ বাদী হয়ে বোনের স্বামী তামিম শেখসহ অজ্ঞাতনামা ২-৩ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
আগৈলঝাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. গোলাম ছরোয়ার জানান, মামলার পর রাতেই আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তামিম শেখ গোপালগঞ্জের বেদগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে তামিম শেখ রাশিদাকে হত্যার জন্য রুবেল নামে এক যুবককে টাকার বিনিময় ভাড়া করেন। এরপর পরিকল্পনা মতো বুধবার রাতে রাশিদাকে নিয়ে গোপালগঞ্জের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে অবস্থান করেন। রাত ৮টার পরে সেখান থেকে তারা বের হন। এরপর রুবেলের সহায়তায় একটি থ্রি হুইলার (মাহিন্দ্রা) ভাড়া করে রাশিদাকে বেদগ্রামে নেওয়া হয়। সেখানে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রাশিদাকে হত্যা করা হয়। সেখান থেকে প্রায় ৫০০ গজ দূর শিশু তানিমকে ফেলে রেখে পালিয়ে যান তারা।
ওসি মো. গোলাম ছরোয়ার বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে তামিমকে নিয়ে বেদগ্রাম থেকে হত্যায় ব্যবহৃত হাতুড়ি ও দেশিয় ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এরপর সন্ধ্যা ৬টার দিকে একই এলাকায় আত্মগোপনে থাকা রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দুজনই রাশিদা বেগমকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
সাইফ আমিন/আরএইচ/এএসএম