আখের রস তৈরির স্বয়ংক্রিয় মেশিনে সুদিন ফিরেছে সজীবের
অডিও শুনুন
সজীব। বয়স ২৩। আগে পেশায় ছিলেন ট্রলিচালক। পেশা বদল করে এখন বিক্রি করছেন আখের রস। এতেই বদলে গেছে জীবন। আখের রস বিক্রি করে প্রতি মাসে আয় করছেন ৪০-৪৫ হাজার টাকা।
রাজশাহীর কাশিডাঙ্গা মোড় থেকে একটু দূরে আখের রস তৈরির স্বয়ংক্রিয় মেশিন নিয়ে রাস্তার পাশে বসেন সজীব।
কথা বলে জানা যায, অল্প বয়সে বিয়ে করেছেন সজীব। তিনি দুই সন্তানের জনক। সংসারের খরচ চালাতে আগে ট্রলি চালাতেন। এর পাশাপাশি বাবা আব্দুস সালামের ১৮ বিঘা জমিতে করতেন কৃষিকাজ।
সজীব জাগো নিউজকে জানান, গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে তার বাবাকে মেশিনটি ট্রায়ালস্বরূপ বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে। মেশিনটি বর্তমানে বিভিন্ন কৃষিযন্ত্র বিক্রয় কেন্দ্রে ৭২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই মেশিন দিয়েই তিনি আখ থেকে রস বের করেন।
সজীব প্রতি গ্লাস আখের রস বিক্রি করেন ১০ টাকায়। প্রতিদিন এক থেকে দেড় হাজার টাকা বিক্রি হয়। সে হিসেবে সজীবের মাসে আয় হয় ৪০-৪৫ হাজার টাকা।
সজীব বলেন, ‘মেশিনটি দেখতে বেশ সুন্দর ও ছোটখাটো হওয়ায় সহজে বহনযোগ্য। অন্যান্য মাড়াই মেশিনের মতো বিকট শব্দও করে না। খুব সুন্দরভাবে একটি নল দিয়ে রস বেরিয়ে আসে, যা ইচ্ছে করলেই বন্ধ করা যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটি মূলত কারেন্টের (বিদ্যুৎ) সাহায্যে চলে। মাসে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার মতো বিদ্যুৎ খরচ হয়। তাই বড় আখ মাড়াই মেশিনের চাইতে এটি অনেক অনেকগুণ ভালো।’
‘নিজেদের জমিতেই রয়েছে পর্যাপ্ত আখ। একবার আখ বুনে তিনবার ফসল পাই। সেই আখ বাজারে বেচলে যা লাভ হবে তার চাইতে দশগুণ বেশি লাভ পাচ্ছেন আখের রস বিক্রি করে’- যোগ করেন আখের রস বিক্রেতা সজীব।
সজীবের পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন তার বাল্যবন্ধু মো. শিশির আহমেদ। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, কৃষি অফিস থেকে সজীবকে যে মেশিনটি দেওয়া হয়েছে তা দেখতে খুবই সুন্দর। ছোটখাটো মেশিন, কাজও খুব ভালো। এই মেশিন দিয়ে তার ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে।
0
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো. তৌফিকুর রহমান বলেন, ‘কাউকে এ ধরনের মেশিন দেওয়া হয়েছে কি না তা আমার জানা নেই। বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকেও দেওয়া হতে পারে। তবে সরকার যদি বেকার যুবকদের জন্য এমন মেশিন সহজশর্তে কম মূল্যে বিতরণ করে, তাহলে দেশে অনেক বেকারত্ব লাঘব হবে।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. আমজাদ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘সুগারমিলের বাইরে যেসব হতদরিদ্র কৃষক রয়েছে, যারা ইক্ষুচাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত, ফসল বিক্রি করতে সমস্যায় পড়েন বা আখ মাড়াই করতে পারেন না, তাদের মতো চাষিদের জন্য সারাদেশে এ ধরনের ২০টি মেশিন বিতরণ করা হয়েছে।’
ফয়সাল আহমেদ/এসআর/এএসএম