রংপুরে কমেছে ডিম-চাল-সবজির দাম, চড়া নতুন আলুর বাজার

রংপুরের বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে পোলট্রি মুরগির দাম। একই সঙ্গে দাম কমেছে শীতকালীন বিভিন্ন সবজি, ডিম ও চালের। তবে বাজারে আসা নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে চড়া দরে। এছাড়া আটা, ময়দা, ডাল, বোতলজাত সয়াবিন ও মাছ-মাংসের দাম প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) রংপুর নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে ব্রয়লার মুরগি গত সপ্তাহের মতোই ১৪০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা তিন সপ্তাহ আগে ১৬০-১৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল।
এছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে পাকিস্তানি মুরগি ১০-২০ টাকা দাম কমে ২৪০-২৫০ এবং দেশি মুরগির দাম একটু বেড়ে ৪২০-৪৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মুলাটোল আমতলা বাজারের মুরগি বিক্রেতা জাহাঙ্গীর আমীর হোসেন বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম অপরিবর্তিত থাকলেও পাকিস্তানি মুরগির দাম কমেছে। তবে দেশি মুরগির আমদানি কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে। মূলত ফেরি করে দেশি মুরগি বিক্রেতারা এখন গ্রামে শ্রমিক হিসেবে ধান কাটা-মাড়াইয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এ কারণে বাজারে এর প্রভাব পড়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন ১৯০ টাকা এবং দুই লিটার ৩৮০ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেল গত সপ্তাহের মতোই ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চালের বাজার ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা বাজারে স্বর্ণা (মোটা) ২-৩ টাকা কমে ৫০-৫২ টাকা, স্বর্ণা চিকন ৫৬-৫৮ টাকা থেকে কমে ৫৪-৫৫ টাকা, বিআর২৮ ৬৬-৬৮ টাকা থেকে কমে ৬৩-৬৫ টাকা এবং আগের মতোই মিনিকেট ৭৫-৭৮ টাকা ও নাজিরশাইল ৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সিটি বাজারের চাল বিক্রেতা আমিনুল ইসলাম বলেন, বাজারে নতুন ধান ও চাল আসতে শুরু করেছে। এ কারণে আমদানি বেড়ে যাওয়ায় দাম কমছে।
এছাড়া গত সপ্তাহের তুলনায় কিছু সবজির দাম কমেছে। প্রতিকেজি টমেটো ১৩০-১৪০ টাকা থেকে কমে ১০০-১২০ টাকা, বাজারে আসা দেশি গাজর ১০ টাকা কমে ৬০-৭০ টাকা, করলা ৫০-৬০ টাকা, শসা আগের মতোই ৫০-৬০ টাকা, চিকন বেগুন ১৫-২০ টাকা, গোল বেগুন ৩৫-৪০ টাকা, পেঁপে আগের মতোই ১৫-২০ টাকা, লেবু প্রতিহালি ৮-১০ টাকা, কাঁচামরিচ ৪০ টাকা, শুকনা মরিচ ৪৫০-৫০০ টাকা, লাউ প্রতিপিস ২৫-৩০ টাকা, ধনেপাতা ৩০-৪০ টাকা, কাঁচকলা হালি ২৫-৩০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০-৬০ টাকা, বরবটি ৩৫-৪০ টাকা, দুধকুষি ৪০-৪৫ টাকা, পটল ৩৫-৪০ টাকা, প্রতিকেজি মিষ্টিকুমড়া ৩৫-৪০ টাকা, চালকুমড়া (আকারভেদে) ৩০-৩৫ টাকা, ঝিঙে ৪০-৫০ টাকা, কাঁকরোল ৪০-৫০ টাকা, শিমের দাম কমে ৩৫-৪০ টাকা, মুলা ১৫-২০ টাকা, বাঁধাকপির দাম কমে ২০-২৫ টাকা এবং ফুলকপি ৩০-৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গত সপ্তাহের তুলনায় আদার দাম বেড়ে ১০০-১২০ থেকে হয়েছে ১২০-১৩০ টাকা ও রসুন আগের মতোই ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে সব ধরনের শাকের আঁটি পাওয়া যাচ্ছে ১০-১৫ টাকায়।
খুচরা বাজারে কার্ডিনাল আলু গত সপ্তাহের মতো ২৩-২৫ টাকা, শিল আলু ৪৫-৪৮ টাকা, ঝাউ আলু ৪৫ টাকা এবং সাদা আলু ৪০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে। তবে বাজারে আসা গ্রানুলা আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা কেজি দরে। এ সপ্তাহেও দেশি পেঁয়াজ ৪৫-৫০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সিটি বাজারের সবজি বিক্রেতা লোকমান হোসেন বলেন, বাজারে শীতের সবজি আসতে শুরু করেছে। এ কারণে দাম কিছুটা কমেছে। তবে নতুন আলুর আমদানি পর্যাপ্ত না থাকায় দাম একটু চড়া।
অন্যদিকে, খুচরা বাজারে খোলা চিনি গত সপ্তাহের মতোই ১১০-১১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্যাকেট আটা ৭০ টাকা ও খোলা আটা ৬৫ টাকা, ছোলা বুট ৮৫-৯০ টাকা এবং ময়দা ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে আগের মতোই মসুর ডাল (মাঝারি) ১১০-১২০ টাকা, চিকন ১৩০-১৪০ টাকা, মুগডাল ১৪০-১৫০ টাকা এবং বুটডাল ৯৫-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পোলট্রি মুরগির ডিমের হালি ১-২ টাকা কমে ৩৭-৩৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গরুর মাংস ৬২০-৬৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ৮০০-৯০০ টাকায় কেজি বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, আকারভেদে রুইমাছ ২৫০-৩০০ টাকা, মৃগেল ২২০-২৫০ টাকা, কারপু ২০০-২২০ টাকা, পাঙাশ ১৫০-১৬০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৬০, কাতল ৪০০-৪৫০ টাকা, বাটা ১৬০-১৮০ টাকা, শিং ৩০০-৪০০ টাকা, সিলভার কার্প ১৫০-২৫০ টাকা এবং গছিমাছ ৬০০-৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
জিতু কবীর/জেএস/জেআইএম