স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে দুই চোখ উৎপাটন, ওসিসহ ১২ জনের নামে মামলা
খুলনায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী শাহজালাল হাওলাদারের দুই চোখ উৎপাটনের ঘটনায় খালিশপুর থানার সাবেক ওসি নাসিম খান ও ১১ পুলিশ-আনসার সদস্যসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) শাহজালালের মা রেনু বেগম বাদী হয়ে খুলনা মহানগর হাকিম আদালত-২ এ মামলাটি করেন। আদালতের বিচারক মো. আল-আমিন মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে দিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী মমিনুল ইসলাম।
মামলার অপর আসামিরা হলেন উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুর ইসলাম, এসআই তাপষ কুমার পাল, এসআই মোরসেলিম মোল্লা, এসআই মিজানুর রহমান, এসআই সৈয়দ সাহেব আলী, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রাসেল, কনস্টেবল আল মামুন, আনসার সদস্য আফসার আলী, ল্যান্স নায়েক আবুল হাসেম, আনসার নায়েক রেজাউল হক ও সুমা আক্তার।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১৭ সালের ১৮ জুলাই মহানগরীর নয়াবাটি রেললাইন বস্তি কলোনির শ্বশুরবাড়ি থেকে রাত ৮টায় মেয়ে শিশুর দুধ কেনার জন্য বাসার পাশে দোকানে যান শাহজালাল। এসময় খালিশপুর থানার ওসি নাসিম খানের নির্দেশে তাকে থানায় ডেকে নেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা থানায় গেলে ওসি তাকে ছাড়ানোর জন্য দেড় লাখ টাকা দাবি করেন। দাবি করা টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ কর্মকর্তারা শাহজালালকে পুলিশের গাড়িতে করে বাইরে নিয়ে যান। পরদিন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তার দুটি চোখ উপড়ানো অবস্থায় দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা।
শাহজালাল জানান, পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে গাড়িতে করে গোয়ালখালী হয়ে বিশ্বরোডের (খুলনা বাইপাস সড়ক) নির্জন স্থানে নিয়ে যান। সেখানে হাত-পা চেপে ধরে ও মুখের মধ্যে গামছা ঢুকিয়ে স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে দুটি চোখ উপড়ে ফেলা হয়।
এ ঘটনায় শাহজালালের মা রেনু বেগম বাদী হয়ে ওই বছরের ৭ সেপ্টেম্বর খুলনার মুখ্য মহানগর হাকিমের আমলি আদালতে মামলা করেন। মামলায় দাবি করা টাকা না পেয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা যোগসাজশে তার ছেলে শাহজালালের দুটি চোখ উৎপাটন করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়।
মামলায় খালিশপুর থানার ১১ পুলিশ ও আনসার কর্মকর্তাসহ ১৩ জনকে আসামি করা হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে আসামিরা পুলিশের প্রভাব খাটিয়ে বাদী ও যুবক শাহজালালকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তুলে নিয়ে সাদা কাগজে সই নিয়ে মামলাটি ধামাচাপা দেন।
মামলার বাদী রেনু বেগম বলেন, তার ছেলের দুটি চোখ উৎপাটন করেছেন পুলিশ ও আনসার সদস্যরা। কিন্তু তিনি ন্যায়বিচার পাননি। তিনি আদালতের কাছে ন্যায়বিচার দাবি করেন। একইসঙ্গে তার ছেলের চোখের চিকিৎসার জন্য সরকারের সহযোগিতা চান।
আলমগীর হান্নান/এসআর/জিকেএস