লালমনিরহাটে কুয়াশা আর ঠান্ডায় জবুথবু জীবন

লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলায় গত চার দিন থেকে ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় জবুথবু হয়ে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন। সন্ধ্যার পর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত বৃষ্টির মতো কুয়াশা ধরছে। প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে যাচ্ছে না। হাসপাতালে বাড়ছে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টাতেও লালমনিরহাটে সূর্যের দেখা মেলেনি। বেলা যতই বাড়ছে শীতের প্রকোপ যেন বাড়ছে।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, সকালে কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে তিস্তা, ধরলা ও সানিয়াজান নদীবেষ্টিত এ জেলার বেশিরভাগ মানুষ নিম্ন আয়ের। গত চার দিন থেকে অনেকেই কাজে বের হতে পারেনি। জীবন-জীবিকার তাগিদে শীতকে উপেক্ষা করে পাতলা কাপড় পরে কাজ করছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। সন্ধ্যার পর থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকছে লালমনিরহাট। এই শীতে শিশু ও বৃদ্ধরা কাহিল হয়ে পড়েছে। অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে।
অপরদিকে ঘন কুয়াশার কারণে আলু ও ভুট্টা খেতে পচন রোগ দেখা দিয়েছে।
ভ্যানচালক জিয়া বলেন,এই ঠান্ডায় ভাড়া পাওয়া খুবই কষ্টকর। ঠান্ডায় মানুষ ঘর থেকে বের হতে চায় না। ভ্যান নিয়ে এই ঠান্ডায় বসে আছি।
হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলার রহমান খোকন বলেন, নদীবেষ্টিত এই ইউনিয়নের ছিন্নমূল মানুষ মাত্র ২৫০ পিস কম্বল পেয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় যা খুবই কম। শীতার্ত মানুষের জন্য আরও কম্বল পেতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছি।
হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আনারুল হক বলেন, শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বেশিরভাগ শিশু ও বৃদ্ধ নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্ট রোগে আক্রান্ত।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক রকিব হায়দার বলেন, শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় শীতার্ত ও ছিন্নমূল মানুষদের এ পর্যন্ত ৩২ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। আরও শীতবস্ত্র বিতরণের জন্য পাঁচ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
রবিউল হাসান/এফএ/এমএস