দোকানপাট বন্ধে দিনে ক্ষতি ১০৭৪ কোটি টাকা, সরকারি সহায়তা দাবি
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সবকিছু বন্ধ করে দিয়ে বাড়িতে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে। সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে আগামী ৯ এপ্রিল পর্যন্ত। সেজন্য দোকানপাট, বিপণিবিতান ও শপিং মল বন্ধ রেখেছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি। তবে তারা বলছে, কেনাবেচা বন্ধ থাকায় তাদের দোকানগুলোর দিনে ক্ষতি হচ্ছে ১ হাজার ৭৪ কোটি টাকা। তারা এ হিসাব করেছে একেকটি দোকানে গড়ে ২০ হাজার টাকা বিক্রি এবং ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ধরে।
এ হিসাব দিয়ে দোকান মালিক সমিতি কর্মচারীদের বেতন দিতে আড়াই হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠনের দাবি জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে সমিতি বলেছে, রফতানিখাতে মজুরি ও বেতন দিতে যে তহবিল গঠন করা হয়েছে, তারাও আংশিক সহায়তা হিসেবে একই ধরনের তহবিল চায়।
দোকান মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রফতানিখাতের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করা হলেও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য কোনো তহবিল গঠন করা হয়নি।
সমিতি আরও বলেছে, সরকার কখনো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের এ ধরনের সহায়তা দেয়নি। তারাও আবেদন জানাননি। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বপ্রণোদিত হয়ে ২০১৩ সালে মতিঝিলে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশের সময় আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বায়তুল মোকাররমের ৩৩৩ জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে ৫০ হাজার টাকা করে সহায়তা দিয়েছিলেন। এবারের করোনাভাইরাস দুর্যোগে শুধু বেতন দিতে ব্যবসায়ীরা ঋণ সহায়তা চাচ্ছেন। এটা শুধু ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য প্রযোজ্য হবে, যাদের কর্মচারী ১৫ জনের কম।
দোকান মালিক সমিতি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য তুলে ধরে তাদের দেয়া হিসাবে বলেছে, ১৫ জনের কম কর্মচারী থাকা পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫৩ লাখ ৭২ হাজার ৭১৬, যা মোট প্রতিষ্ঠানের ৩৯ শতাংশ। এসব প্রতিষ্ঠানে ৯৭ লাখ ১৩ হাজার ৯২৯ জন কর্মী কাজ করেন। তাদের মোট মাসিক বেতন ১৪ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা।
দোকান মালিক সমিতি বলেছে, একজন কর্মচারীর গড় বেতন ১৫ হাজার টাকা ধরে তারা আংশিক বেতন ৭ হাজার টাকা হিসাবে আড়াই হাজার কোটি টাকার তহবিল চায়। এ তহবিল থেকে তারা বিনা সুদে ঋণ চায়। এক বছরের জন্য তারা এই ঋণ দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে, যা ছয় মাস পর থেকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পরিশোধ শুরু করবেন।
সমিতির পক্ষ থেকে ঋণের কিস্তি পরিশোধে ছয় মাস সময় দেয়ার অনুরোধ করা হয়। পাশাপাশি চক্রবৃদ্ধি সুদ আদায় বন্ধ রেখে সরল সুদের দাবি করা হয়।
দোকান মালিক সমিতির বিবৃতিতে বলা হয়, ক্ষুদ্র ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন নগদ টাকায় লেনদেন করেন। দোকান বন্ধ থাকায় তারা নগদ টাকাও পাচ্ছেন না। বেতনও দিতে পারছেন না।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণার আগে ২৫ মার্চ থেকে দোকানপাট বন্ধের ঘোষণা দেয় দোকান মালিক সমিতি। পরে তা বাড়িয়ে সরকারের ঘোষিত সাধারণ ছুটির সঙ্গে মেলানো হয়। এদিকে সরকারও সাধারণ ছুটি বাড়িয়ে আগামী ৯ এপ্রিল পর্যন্ত নির্ধারণ করেছে, যা প্রথম ঘোষণায় ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছিল।
এমইউএইচ/এইচএ/পিআর