সংকটকালে কারখানায় না এলে শ্রমিকের চাকরি যাবে না
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলমান ছুটি আরও সাতদিন বাড়ানো হয়েছে। আগামী ৫ থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। তবে সরকারের আগের ঘোষণার সঙ্গে দেশের পোশাক কারখানাগুলো ছুটি দেয়া হলেও এবার সেই ছুটি বাড়ানোর কোনো ঘোষণা আসেনি। তাই ৫ এপ্রিল (রোববার) থেকে কারখানাগুলো খুলবে। তবে মহামারির এ সংকটকালে যদি কোনো পোশাক শ্রমিক কারখানায় আসতে না পারেন, তাহলে তার চাকরি যাবে না।
শনিবার (৪ এপ্রিল) জাগো নিউজকে এ কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ড. রুবানা হক। পোশাক কারখানাগুলোর ছুটি শেষ হওয়ার আগের দিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাকামুখী শ্রমিকদের ঢল নেমেছে।
জানতে চাইলে রুবানা হক বলেন, যাদের কাজ আছে তারা কারখানা চালাবে। তবে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে চালাতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে ২৫ মার্চ গণপরিবহন বন্ধ করা হয়েছিল, আর আমরা গার্মেন্টস বন্ধ করেছিলাম ২৬ মার্চ। আমাদের বেশিরভাগ শ্রমিক কারখানার আশপাশেই থাকেন। এর পর যদি তারা বাড়িতে চলে যান তার দায়িত্ব কে নেবে?
দেশে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং হোম কোয়ারেন্টাইনে বাধ্য করতে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তায় মাঠে রয়েছে সশস্ত্র বাহিনী। সারাদেশে কার্যত স্বেচ্ছায় ঘরবন্দি সবাই। বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন। এ অবস্থায় চাকরি বাঁচাতে পায়ে হেঁটে ঢাকার পথে রওনা হয়েছেন হাজারো পোশাক শ্রমিক। এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হবে কি-না জানতে চাইলে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, বিষয়টি আমরা দেখছি। তবে এরা সবাই যে পোশককর্মী তা নয়। আর এখন বর্তমান পরিস্থিতি সবার বুঝতে হবে। তবে এতটুকু বলতে পারি যারা বাড়ি থেকে আসতে পারবে না, তাদের চাকরি যাবে না।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলমান ছুটি আরও সাতদিন বাড়ানো হলেও ৫ এপ্রিল থেকে কারখানা খোলা রাখা যাবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই শ্রমিকদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। বিকেএমইএ সভাপতি বলেন, যেসব কারখানা বন্ধ রাখবে তারা শ্রমিকদের পাওনা নিয়ম অনুসারে পরিশোধ করবে।
এক বিশেষ নির্দেশনায় বিকেএমইএ’র পক্ষ থেকে বলা হয়, ৪ এপ্রিলের পর থেকে কারখানা চালু রাখবেন কি-না বন্ধ রাখবেন এটি আপনার সিদ্ধান্ত। যদি কেউ কারখানা চালু রাখেন তাহলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে শ্রমিকদের সুরক্ষায় ব্যবস্থা নেবেন। স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিধি মেনে কারখানা পরিচালনা করবেন।
৪ এপ্রিলে পর্যন্ত বিকেএমইএ’র পক্ষ থেকে কারখানা বন্ধ রাখার যে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল, তা আর ৪ এপ্রিলের পর থেকে থাকছে না। তবে কারখানা চালু কিংবা বন্ধ রাখার বিষয়টি বিকেএমইএকে জানাতে হবে।
বিকেএমইএ সভাপতি বলেন, কারখানা খোলা বা বন্ধ যে সিদ্ধান্তই গ্রহণ করুন না কেন, শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন অবশ্যই সময়মত দিতে হবে। কোনো অবস্থাতেই বেতন দিতে দেরি করা যাবে না। শ্রমিক অসন্তোষ যেন সৃষ্টি না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
জানা গেছে, রোববার থেকে দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলো চালু রাখার পক্ষে মালিকরা । তবে এখন পর্যন্ত তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।
এসআই/এইচএ/জেআইএম