এমএসএমইর প্রণোদনার অর্থ সরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে দেয়ার আহ্বান
করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশের অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (এমএসএমই) জন্য ঘোষিত প্রণোদনার অর্থ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।
বুধবার (২২ এপ্রিল) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও ডিসিসিআইয়ের মধ্যকার করোনা ভাইরাস উদ্ভুত পরিস্থিতিতে অর্থনীতির সামগ্রিক বিষয় আলোচনাকালে ডিসিসিআই সভাপতি শামস মাহমুদ এ আহ্বান জানান।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, বিশেষ আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা সত্ত্বেও ব্যাংক থেকে ঘোষিত প্যাকেজের আওতায় কুটির, এমএসএমই খাতের ব্যবসায়ীদের ঋণ প্রাপ্তি সহজতর নাও হতে পারে। কারণ বেশিরভাগ কুটির, এসএমই, এমএসএমই এবং নগদ লেনদেন নির্ভর ব্যবসাসমূহ ঋণ প্রাপ্তির আবশ্যকীয়তা পূরণের অভাব রয়েছে।
আবার বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর মত ব্যাংকের সঙ্গে ততটা ভালো সুসম্পর্ক নেই। তাই প্রণোদনার টাকা থেকে ঋণ পেতে সমস্যা হতে পারে। তাই এমএসএমইর প্রণোদনার অর্থ এ খাতের ব্যবসায়ীদের প্রদান করতে সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে দায়িত্ব দেয়ার পরামর্শ দেয় হয়।
এদিকে ক্রমান্বয়ে কীভাবে কিছু কিছু ব্যাবসা-বাণিজ্যিক কার্যক্রমকে পুনরায় চালু করা যায় তার একটি পরিকল্পনা প্রণয়নে ডিসিসিআই অর্থ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানায়।
সংগঠনটির আরও দাবির মধ্যে রয়েছে, নতুন এমএসএমই যাদের ব্যবসা পরিচালনার অভিজ্ঞতা সর্বোচ্চ দুই বছর বা তারও কম, তাদের ব্যবসা পুনর্নিবন্ধন ফি, গ্যাস, বিদুৎ ও পানির বিল, ব্যাংক সংক্রান্ত অন্যান্য চার্জ এবং আমদানি, রফতানি সংক্রান্ত বন্দরের চার্জসমূহ মওকুফ করা। এ ধরনের এমএসএমইদের দুই বছরের জন্য পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের আওতায় এক শতাংশ সুদে চলতি মূলধন হিসেবে ‘ব্যবসায় পুনরুদ্ধার তহবিল’ প্রদান করা যেতে পারে।
ই-কমার্স ব্যবসাতে যাতে আরও এমএসএমই খাতের উদ্যোক্তারা আগ্রহী হতে পারেন তাই তিনি তাদের ভ্যাট, ট্যাক্স অব্যাহতি দেয়া অথবা নগদ প্রণোদনা দেয়ার প্রস্তাব করে ডিসিসিআই।
এছাড়া অপ্রচলিত খাত যেমন ভাসমান ব্যবসায়ী, হকার, ভাসমান দোকান, মুদি এবং এক ব্যক্তি নির্ভর একক ব্যবসায়ী যারা আছেন তাদেরকে সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতায় নিয়ে এসে ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে স্বল্প সুদে ব্যবসা পুনর্গঠনে জরুরি তহবিল দেয়া যেতে পারে। যথাযথ সম্পৃক্ততার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে স্বল্প সুদে ঋণ গ্রহণ করে সেই অর্থ বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজের সঙ্গে যুক্ত করা যেতে পারে।
এ সময় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বিভিন্ন পদক্ষেপের ওপর জোরারোপ করে বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে সব স্তরের মানুষের কথা বিবেচনায় একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও স্বচ্ছ আর্থিক প্রণোদনা প্রদানে নীতিমালা গ্রহণ করেছে। স্বল্প সুদে ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে প্রণোদনা প্যাকেজকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অংশীদারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার ইতিমধ্যেই নানা পদক্ষেপ ও কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আর এসব পদক্ষেপ ও কর্মসূচি অত্যন্ত স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সঙ্গে নেয়া হয়েছে।
এসআই/এএইচ/এমএস