করোনায় আদিবাসীদের কলা কিনলো ‘স্বপ্ন’
টাঙ্গাইলের মধুপুরের বিস্তৃত অঞ্চলজুড়ে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস। মূলত কৃষিকাজ করেই এদের জীবিকা নির্বাহ হয়। তবে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে স্থানীয় বাজার বন্ধ থাকায় উৎপাদিত সবজি ও ফল বিক্রি করতে পারছিলেন না তারা। তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে চেইন সুপারশপ স্বপ্ন। আদিবাসীদের কাছ থেকে এক ট্রাক কলা কিনে নিয়েছে সুপারশপটি।
জানা যায়, মধুপুরের জলছত্র বাজার এলাকার আশপাশে বসবাস করেন ৩৫ থেকে ৪০ হাজার আদিবাসী। এসব আদিবাসীর জীবন ধারণের একমাত্র ভরসা কৃষিপণ্য। তবে সম্প্রতি করোনার প্রাদুর্ভাবে থেমে যায় তাদের স্বাভাবিক জীবন। উৎপাদিত ফসল বেচতে পারছিলেন না, যাও বিক্রি করছিলেন, পাচ্ছিলেন না ন্যায্য মূল্য। সেজন্য কিছুদিন ধরেই তাদের জীবিকা নির্বাহে চলছে অভাব–অনটন।
ওই এলাকার জাঙ্গালিয়া ও নয়নপুর গ্রামের পাশে একমাত্র জলছত্র বাজার এক মাস ধরে বন্ধ থাকায় অনেক চাষির কলা পচতেও শুরু করে। খবর পেয়ে স্বপ্ন’র পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় এবং এক ট্রাক কলা নেয় সুপারশপটি।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) ও বাগান মালিক সনজু সংমা বলেন, এখানকার চাষিদের অবস্থা খুবই খারাপ। আমারও চাষের কলা আছে। এখানে আমার বাগানের কলা এবং আদিবাসী রমনাথ মারাকের বাগানের কলাসহ অনেক আদিবাসী কৃষকের কলা কিনেছে ‘স্বপ্ন’। তারা এক ট্রাক কলা কিনে নিয়েছে একদিনে।
এ প্রসঙ্গে স্বপ্ন’র হেড অব পার্চেজ সাজ্জাদুল হক বলেন, গত তিন বছর ধরেই আমরা নিয়মিত আদিবাসীদের চাষাবাদ করা বিভিন্ন পণ্য কিনছি। কিন্তু এবারের সংকটটা ভিন্ন। করোনার প্রাদুর্ভাবে তাদের পণ্যগুলো কেউ বাজারে বেচতে পারছিলেন না। কারণ তাদের গ্রামের পাশের জলছত্র বাজারটি দীর্ঘদিন বন্ধ। বিষয়টি আমি অফিসকে জানাই। এরপর অফিসের সিদ্ধান্তেই তাদের কাছ থেকে পণ্য কেনা শুরু করেছি আমরা। ‘স্বপ্ন’ এভাবেই দুঃসময়ে আদিবাসী চাষিদের পাশে দাঁড়িয়েছে।
অনলাইন নিউজপোর্টাল জাগো নিউজসহ অন্যান্য গণমাধ্যমের খবারের ওপর ভিত্তি করে কিছু দিন আগে টাঙ্গাইল, গাইবান্ধা, পঞ্চগড়, বগুড়া, যশোরসহ দেশের অনেক জায়গায় কষ্টে থাকা কৃষক থেকেও পণ্য কিনেছে স্বপ্ন।
এ বিষয়ে সুপারশপটির নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির বলেন, আদিবাসীদের এই সংকটে তাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়বে স্বপ্ন। যেখানেই সংকট আর বিপর্যয় কৃষকের জন্য কাল, সেখানেই পৌঁছে যাবে ‘স্বপ্ন’।
এফএইচ/এইচএ/এমকেএইচ