এ কে আজাদ
দুর্নীতি বন্ধ না হলে বড় বাজেটের সুফল পাবে না সাধারণ মানুষ
ফরিদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য এ কে আজাদ বলেছেন, শুধু মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ বাড়ালেই চলবে না, বরাদ্দ বাড়ানো সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হলে দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্সের যে ঘোষণা, ওই জায়গায় যদি না যেতে পারি তাহলে বাজেট বাড়িয়েও কোনো কাজে হবে না।
রোববার (৫ মে) সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে সিপিডি-নাগরিক প্ল্যাটফর্মের ‘নতুন সরকার, জাতীয় বাজেট ও জনমানুষের প্রত্যাশা’ শীর্ষক প্রাক বাজেট সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা তাদের বাজেট প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
আগামী বাজেটে নিম্ন আয়ের মানুষের কল্যাণ এবং স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করতে এসব খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পরিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠী।
এ সময় সবার বাজেট প্রস্তাবনা শুনে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে এ কে আজাদ বলেন, ভোটের পর বাড়ি গেলে প্রতিদিন প্রায় আড়াইশ মানুষ দেখা করতে আসে। এর মধ্যে ৪০ শতাংশই চিকিৎসা সংক্রান্ত তদবিরে। সেখানে দুটো সরকারি হাসপাতাল আছে। দুটো হাসপাতাল থাকতে কেন এত রোগী আমার কাছে আসে। সবাই রেফার্ড টু ঢাকা চায়। সাধারণ চোখের সমস্যায় তারা ঢাকায় যেতে চায়। এসব রোগীর টাকা দিয়ে ঢাকায় পাঠাতে হয়। ঢাকায় তাদের থাকার জায়গা নেই। মেডিকেলে গেলেই যে ভর্তি হতে পারবে সেই নিশ্চয়তা নেই। আমি দুজন লোককে বেতন দিয়ে ঢাকা মেডিকেলের ইমারজেন্সিতে রাখলাম যেন রোগীরা ফেরত না আসে।
আরও পড়ুন
নিজ আসনের হাসপাতালগুলোর অব্যবস্থাপনার চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, আমি সেখানে সাংবাদিক পাঠালাম। সেখানে সাংবাদিক যেটা জানালেন, ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে ৬৫ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি অকেজো হয়ে পড়ে আছে। রেডিওথেরাপি মেশিন কেনা হয় ১৮ কোটি টাকায়, সেটা সাত বছর ধরে বাক্সবন্দি অবস্থায় পড়ে আছে। জনবল সংকটে ক্যাথল্যাব মেশিন সাত বছরে ব্যবহার হয় না।
‘একদিকে হাসপাতালে প্রচুর রোগীর চাপ অন্যদিকে হাসপাতালের নিচে দালালের দৌরাত্ম্য। আমি হাসপাতাল ঘুরে দেখলাম। দেখলাম আইসিউতে অনেক মেশিন নষ্ট। এভাবে অব্যবস্থাপনা চলছে হাসপাতালে। ওখানে একটি বক্ষব্যাধি হাসপাতাল আছে। সেখানে কোনো রোগী নেই। তিনজন রোগীকে মাসিক বেতনে ভাড়া দিয়ে রাখা হয়েছে যেন চিকিৎসকরা ঠিকমতো বেতন পান। বাজেট ওখানে ঠিকমতো যাচ্ছে।’ বলেন তিনি।
সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সংলাপে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে বিরোধীদলীয় উপনেতা ও সাবেক মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, নাগরিক প্লাটফর্মের কোর সদস্য ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
এসএম/ইএ/জিকেএস