বিজিআরআইর ডিজি আবদুল আউয়ালের পদত্যাগ চান কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:২৮ এএম, ১৩ আগস্ট ২০২৪
ছবি- সংগৃহীত

অনিয়ম, দুর্নীতি, দলীয়করণ ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর মিথ্যা অপবাদ এবং শাস্তিমূলক বদলিসহ নানা ধরনের কার্যক্রমে জড়িত থাকায় বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিজেআরআই) মহাপরিচালক (ডিজি) ড. মো. আবদুল আউয়ালের পদত্যাগ ও শাস্তি দাবি করেছে প্রতিষ্ঠানের সর্বস্তরের বিজ্ঞানী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সোমবার (১২ আগস্ট) রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউস্থ প্রতিষ্ঠানটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ অভিযোগ করেন।

এতে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন বিজেআরআইর বৈষম্যবিরোধী কমিটির সভাপতি কৃষিতত্ত্ব বিভাগের চিফ সায়েন্টিফিক অফিসার (সিএসও) ড. মো. আব্দুল আলীম। বক্তব্য দেন জিআরএস বিভাগের এসএসও মো. খায়রুল হাসান প্রধান, ফার্ম ম্যানেজমেন্ট শাখার পিএসও ড. মো. লুৎফর রহমান, পিএসও মো. মাকসুদুর রহমান প্রমুখ।

লিখিত বক্তব্যে ড. আব্দুল আলীম বলেন, বিজেআরআইর দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিস্ট মহাপরিচালক ড. মো. আবদুল আউয়ালের পদত্যাগ ও শাস্তি চাই। তিনি এই প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংসের দারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছাত্রদের বিপক্ষে দাঁড় করিয়ে ছিলেন। বিশেষ করে গত ৪ আগস্ট বিজেআরআই’র সর্বস্তরের বিজ্ঞানী/কর্মকর্তা/কর্মচারীদের মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের কথা বলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে র‌্যালি এবং মিছিলে জোরপূর্বক বাধ্যতামূলকভাবে দাঁড় করিয়েছিলেন। তার এই কাজ ছিল অত্যন্ত ন্যক্কারজনক ও দুঃখজনক। তাছাড়া গবেষণার প্রয়োজনে ডিজির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি পরিচালক থেকে শুরু করে সর্বস্তরের সবাইকে অপেক্ষমান রুমে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত বসিয়ে রেখে বহিরাগত লোকদের নিয়ে গল্পগুজবে থাকতেন। গবেষণা কার্যক্রমে সহযোগিতা করতেন না। তিনি বিজেআরআই রেস্ট হাউজে তার নিজ এলাকার আওয়ামী রাজনৈতিক দলীয় লোকদের নিয়ে সব সময় দখল করে রাখেন। যার ফলে কর্ম পরিবেশের প্রচণ্ড ব্যাঘাত ঘটে।

এদিকে যেকোনো বিষয়ে ডিজির ইচ্ছার বিরুদ্ধে মতামত দিলেই তাকে বিভিন্ন জায়গায় অনৈতিকভাবে বদলি করে দেন। এমনকি একটি পদের বিপরীতে কয়েকজনকে আঞ্চলিক/উপকেন্দ্রগুলোতে সংযুক্ত করে থাকেন। এছাড়াও জুনিয়র বিজ্ঞানীর অধীনে সিনিয়র বিজ্ঞানীকে সংযুক্ত করেছেন। এতে কাজের পরিবেশ চরমভাবে নষ্ট হয়েছে।

অবৈধভাগে নিয়োগ দিতেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডিজি তার নিজ জেলা ও পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে শতাধিক ব্যক্তিকে বিভিন্ন পদের অনুকূলে দৈনিক হাজিরা ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়েছেন। এসব নিয়োগের আইনগত কোনো বৈধতা না থাকলেও তিনি তাদের নিয়োগ দিয়ে রেখেছেন।

অবৈধভাবে বাসস্থান দখল করে রেখেছেন উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় তিনি বিজেআরআই’র বিজ্ঞানী/কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্য নির্ধারিত বাসায় বিজেআরআই বর্হিভূত লাকজনকে অবৈধভাবে থাকার ব্যবস্থা করেছেন। কর্মরত ব্যক্তিরা বাসা পাচ্ছে না। তাদের বাইরে অন্যস্থানে বাসার ব্যবস্থা করে থাকতে হচ্ছে। কেউ কেউ ভাড়া বাসাতেও থাকছেন। তা ছাড়া মহাপরিচালকের গাড়িচালককে আঘাত করা হয়েছে উল্লেখ করে শেরেবাংলা নগরের সেনাবাহিনীর কমান্ডিং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন তিনি। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

বিজেআরআই থেকে মহাপরিচালক নিয়োগের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের এই প্রতিষ্ঠানে যোগ্য ও অভিজ্ঞ প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন সময়ে নার্সভুক্ত প্রতিষ্ঠান হতে মহাপরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। ভবিষ্যতের জন্য এসব কাজ করতে হবে।

মো. মাকসুদুর রহমান জানান, ছাত্রদের আন্দোলনে সাফল্য কামনা করায় তাকে গত ২৬ জুলাই তার চেয়ে কয়েক গ্রেড নিচের কর্মকর্তার অধীনে বদলি করা হয়েছে।

মো. খায়রুল হাসান প্রধান বলেন, ডিজি আবদুল আউয়াল বিজেআরআইর গবেষণা কার্যক্রমকে ধ্বংসের দারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন। তার কারণে বিজ্ঞানীরা উদ্ভাবনমূলক কাজ করতে পারে না। নিজে নানান ফন্দি-ফিকিরে অর্থ আত্মসাৎ করেন।

এনএইচ/এমআরএম/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।