করোনায় প্রাথমিকের আরও এক শিক্ষকের মৃত্যু, আক্রান্ত ৫৪২
করোনাভাইরাসে প্রাথমিক শিক্ষার ৫৪২ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ১১ শিক্ষক, এক জন কর্মকর্তা ও এক জন কর্মচারী মারা গেছেন। আর এ পর্যন্ত সুস্থও হয়েছেন শতাধিক। গতকাল শুক্রবার (১৭ জুলাই) একজন শিক্ষক মারা গেছেন, নতুন করে ৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন, সুস্থ হয়েছেন ২০ জন। শনিবার (১৮ জুলাই) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) ওয়েবসাইটে করোনা আপডেট থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
ডিপিই’র তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত প্রাথমিকের ৪১০ জন শিক্ষক, ৬৭ জন কর্মকর্তা, ৪৪ জন কর্মচারী ও ২১ জন শিক্ষার্থী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১১ জন শিক্ষক, এক জন কর্মকর্তা ও এক জন কর্মচারী মারা গেছেন। আর এ পর্যন্ত ১০২ জন সুস্থ হয়েছেন। এর মধ্যে ৭২ জন শিক্ষক, ১৩ জন কর্মকর্তা, কর্মচারী ৯ ও ৮ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন।
দেখা গেছে, আক্রান্তকারীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৮৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪২ জন, চট্টগ্রামে ১৩৮ জন, খুলনায় ৫৩ জন, বরিশালে ২৯ জন, সিলেটে ৫২ জন, রংপুরে ২৯ জন এবং ময়মনসিংহে ১৬ জন রয়েছেন। হিসাব অনুযায়ী ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
জানা গেছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রাথমিক শিক্ষকদের মধ্যে অনেকের অবস্থা মুমূর্ষু। নিজ উদ্যোগেই নানাভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা। নিম্ন বেতনের প্রাথমিক শিক্ষকরা কোভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে বড় ধরনের সংকটে পড়েছেন। পরিবারের সদস্যরাও কেউ কেউ আক্রান্ত হয়েছেন।
আক্রান্ত শিক্ষকরা জানিয়েছেন, তাদের নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে তাদের কারো কারো খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। তবে স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক শিক্ষকদের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে আক্রান্তদের নানা ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। কারো চিকিৎসকের পরামর্শ লাগলে সে ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। যেসব শিক্ষক কোভিড-১৯ আক্রান্ত, তাদের বেশিরভাগই নিজের বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন। আর হাসপাতালে ভর্তি আছেন কয়েকজন। তবে সম্প্রতি প্রাথমিকের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে কোভিড-১৯ আক্রান্তের তথ্য সংগ্রহ কাজ শুরু করেছে ডিপিই। প্রতিদিন এ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে ২৪ ঘণ্টা পরপর ওয়েবসাইটে আপডেট করা হচ্ছে।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. শামছুদ্দিন মাসুদ জাগো নিউজকে বলেন, প্রকৃত আক্রন্তের সংখ্যা উঠে না আসলেও শিক্ষকরা সচেতন হয়ে উঠছেন। করোনার উপসর্গ দেখা দেয়ার পর খুব কম সংখ্যক শিক্ষক তা প্রকাশ করছেন। এতে তারা নিজেদের ও পরিবারের ক্ষতি করছেন, সকলের কল্যাণে এমন চিন্তাভাবনা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা শিক্ষক সমাজ, মানুষ গড়ার কারিগর হয়ে যদি অসচেতন হই তবে আমাদের দেখে মানুষের শেখার কিছু থাকবে না। তাই করোনার কোনো উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত পরীক্ষা করতে ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবগত করতে শিক্ষকদের আহ্বান জানান তিনি।
এমএইচএম/এমএফ/এমএস