করোনায় ৮০০ কোটির ক্ষতি বলিউডে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:২৯ এএম, ১৮ মার্চ ২০২০

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে হলিউড, বলিউড তথা টলিউডে শুটিং বন্ধ, বাতিল সব কাজ। ফলে বিশ্বজুড়ে বিনোদন জগতে বড় আর্থিক ধস নামতে চলেছে। সবচাইতে ক্ষতিগ্রস্ত কলাকুশলীরা। যারা দিনরাত খেটে পরিচালকের ভাবনাকে পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে সাহায্য করা স্পটবয়, সহকারী-কলাকুশলীদের আর্থিক সাহায্যের জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন বলিউড পরিচালকরা।

ভারতীয় গণমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনের খবরে বলা হয়েছে, আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত সিনেমা, ওয়েবসিরিজ কিংবা ধারাবাহিক, যাবতীয় শুটিংয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় এবং একাধিক বিগ বাজেটের ছবির মুক্তি পিছিয়ে যাওয়ায় বড়সড় লোকসানের মুখে বিনোদন ইন্ডাস্ট্রি।

করোনা আতঙ্কে এখন সাধারণ মানুষ যেখানে ঘর থেকে বেরোতে চাইছেন না, সেখানে সিনেমা হলে গিয়ে ছবি দেখা তো অনেক দূরের কথা। আর তাই করোনার প্রভাব পড়েছে বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে মুক্তি পাওয়া ছবিগুলোতেও। গত ৬ মার্চ মুক্তি পায় টাইগার শ্রফ ও শ্রদ্ধা কাপুর অভিনীত ‘বাঘি থ্রি’। কিন্তু প্রথম সপ্তাহে ছবিটির মোট আয় মাত্র ৯০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। অন্যদিকে মুক্তি পায় ইরফান খান অভিনীত ‘আংরেজি মিডিয়াম’। কিন্তু এই ছবিটি তিন দিনে ঘরে তুলেছে মাত্র সাড়ে ৯ কোটি টাকা।

এই সময়ের খবরে বলা হয়েছে, তথ্যাভিজ্ঞ মহল জানিয়েছে, ৯০ কোটির থেকেও বেশি আয় করার কথা ছিল ‘বাঘি থ্রি’র। কিন্তু ইতোমধ্যে ২৫-৩০ কোটি টাকা লোকসান হয়ে গেছে ছবিটির। একই অবস্থা ‘আংরেজি মিডিয়াম’-এর। সিনেমা হলগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভালো ব্যবসা করতে পারছে না ইরফান খান অভিনীত ছবিটিও। বলতে গেলে- সিনেমা হল ও ছবির শুটিং বন্ধ হওয়ায় বলিউড ইন্ডাস্ট্রি প্রায় ৮০০ কোটি টাকার সম্মুখিন হতে হয়েছে।’

অন্যদিকে, করোনাভাইরাসের কারণে পিছিয়ে গেছে ‘সূর্যবংশী’, ‘উধম সিং’, ‘নো টাইম টু ডাই’, ‘ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস নাইন’, ‘ব্রক্ষ্মাস্ত্র’ছবির মুক্তি।

সংবাদ প্রতিদিনের খবরে আরও বলা হয়, বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে প্রায় হাজার হাজার স্পটবয়, লাইট অ্যাসিস্ট্যান্ট, সেট-শিল্পী আছেন। তারা রোজ ৮ ঘণ্টার শিফট হিসেবে পারিশ্রমিক পান। মূলত তারা কাজ করলে টাকা পান, না করলে পান না। কয়েকদিন ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ থাকলে সব থেকে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হবেন তারাই।

করোনার ধাক্কা টালিগঞ্জের স্টুডিওপাড়াতেও। দেব, জিৎ-সহ একাধিক তারকার ছবির শুটিং বাতিল হয়েছে। পিছিয়েছে প্রচুর সিনেমার মুক্তি। ফলে অগ্রিম টাকা দিয়ে লোকেশন বুক করেও বাতিল হয় শুটিং। টলিউডও অর্থনৈতিক ধাক্কার সম্মুখীন হতে যাচ্ছে।

indian-entertainment-indust

পরিচালক অরিন্দম শীল বলছিলেন, টালিগঞ্জের জুনিয়র টেকনিশিয়ানদের দিন আনে দিন খাইয়ের মতো অবস্থা। এমতাবস্থায় তারা যে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তা বলাই যায়!

বলিউড হোক কিংবা টলিউড, জুনিয়র টেকনিশিয়ানদের নিয়ে কিন্তু চিন্তায় বিনোদন ইন্ডাস্ট্রির সবাই।

গত রোববার ইন্ডিয়ান মোশন পিকচার্স প্রোডিউসর্স অ্যাসোসিয়েশন, ফেডারেশন অব ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়া সিনে এমপ্লয়িজ এবং ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের সান্ধ্যকালীন বৈঠকে ৩১ মার্চ পর্যন্ট শুটিং বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়।

এর পরই বলিউড পরিচালক সুধীর মিশ্রই প্রথম জুনিয়র টেকনিশিয়ানদের আর্থিক সাহায্যের জন্য একটি তহবিল গড়ার প্রস্তাব পেশ করেন। এদিন সন্ধ্যায় সুধীর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই প্রস্তাব রাখায় তাতে সমর্থন জানান অনুরাগ কাশ্যপ, অনুভব সিনহা, বিক্রমাদিত্য মোতওয়ানির মতো পরিচালকরা।

অন্যদিকে ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অশোক পণ্ডিত জানান, তাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই জুনিয়র টেকনিশিয়ানদের জন্য রেশন বরাদ্দ করা হয়েছে। উপরন্তু অশোক নিজেও সুধীর, অনুরাগ, অনুভব, বিক্রমাদিত্যকে আহ্বান জানিয়েছেন যে, তারা সাহায্য করতে চাইলে সেই তহবিলেই অর্থ দান করতে পারবেন।

জেডএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।