একটা সময় ফুটবল ও হকির মত খেলায় মোহামেডান আর আবাহনীই ছিল মূল শক্তি। শিরোপা লড়াই ওই ২ দলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতো। ৭০, ৮০ আর ৯০ দশকে আবাহনী ও মোহামেডানের দাপট ও শ্রেষ্ঠত্ব ছিল সমান সমান। বর্তমান শতাব্দীর শুরুর দিকেও মোহামেডানই ছিল আবাহনীর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী।
Advertisement
বেশিরভাগ আসরের শিরোপা দুই জনপ্রিয় দলই ভাগ করে নিয়েছে। ক্রিকেটেও তার বাইরে ছিল না। আবাহনী এক বছর চ্যাম্পিয়ন হলে হয়তো পরের বছর লিগ ট্রফি জিততো মোহামেডান। কিন্তু ২০১০ থেকেই বদলে গেছে চালচিত্র। ফুটবল-ক্রিকেট দুটিতেই আবাহনীর একচেটিয়া প্রাধান্য। মোহামেডান দিনকে দিন পিছিয়ে পড়েছে। ক্রিকেটে সেই ২০০৯ সালে শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে খালেদ মাসুদ পাইলটের নেতৃত্বে এই আবাহনীকে হারিয়ে লিগ ট্রফি জিতেছিল মোহামেডান। তারপর কয়েকবার রানার্সআপ হলেও চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি সাদাকালোরা।
সেখানে আবাহনীর সাফল্যের পতাকা এখনো পত পত করে উড়ছে। গতবারসহ শেষ ৪ লিগের ৩টিতেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আকাশি-হলুদরা। স্বাধীনতার পর ঢাকার ক্লাব ক্রিকেট লিগে আবাহনী ২২ বার শিরোপা জিতেছে। সেখানে মোহামেডানের ঘরে লিগ ট্রফি উঠেছে ৯ বার। এর মধ্যে সেই ২০১০ থেকে ২০২৪- ১৪ বছর ট্রফিশূন্য মোহামেডান।
এবার অনেক দিন পর শিরোপার হাতছানি মোহামেডানের সামনে। তবে কঠিন সত্য হলো, যে দল নিয়ে মোহামেডান এবার প্রিমিয়ার লিগ শুরু করেছিল, এখন তার অর্ধেক শক্তির দল হয়ে গেছে। আগামীকাল ২৯ এপ্রিল খর্বশক্তির দল নিয়েই আবাহনীর বিপক্ষে অঘোষিত ফাইনালে খেলতে হবে সাদাকালোদের।
Advertisement
নিয়মিত একাদশের সাত-আটজন ক্রিকেটার ছাড়া মোহামেডান কি শেষ পর্যন্ত পারবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীকে হারাতে? যদি পারে, তাহলে প্রায় দেড়যুগ পর মতিঝিল ক্লাব পাড়ায় আবার প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের শিরোপা উঠবে।
আবাহনী আর মোহামেডানের সুপার লিগের ম্যাচটিকে ‘অঘোষিত ফাইনাল’ বলা হচ্ছে। কারণ, এই ম্যাচের ফলের ওপরই লিগ নির্ধারিত হবে। যে দল জিতবে, সেই দলই হবে লিগ বিজয়ী।
এটুকু শুনে হয়তো ভাবছেন, দুই দলের পয়েন্ট বুঝি সমান। নাহ, তা নয়। আকাশি-হলুদ জার্সির আবাহনী ২ পয়েন্ট ওপরে। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের দলের পয়েন্ট ১৫ খেলায় ২৬। আর সমান ম্যাচে সাদাকালো মোহামেডানের সংগ্রহ ২৪।
আবাহনী জিতলে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর পয়েন্ট পার্থক্য হবে ৪। তখন আবাহনীর সংগ্রহ দাঁড়াবে ১৬ খেলায় ২৮। আর মোহামেডান ২৪-এই থাকবে। কাজেই ৪ পয়েন্ট এগিয়ে চ্যাম্পিয়ন হবে আবাহনী।
Advertisement
এর বাইরে যদি খেলা নাও হয়, বৃষ্টি বা অন্য কোনো প্রাকৃতিক কারণে পরিত্যক্ত হয় গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটি, তবু আবাহনী লিগ শিরোপা পাবে। তখন দুই দলের পয়েন্ট পার্থক্য থাকবে ৩ পয়েন্ট।
অর্থাৎ চ্যাম্পিয়ন হতে হলে জয় ছাড়া বিকল্প পথ নেই মোহামেডানের। সাদাকালোরা জিতলে দুই দলের পয়েন্ট সমান হয়ে যাবে। তখন দুই পক্ষের পারস্পরিক মোকাবিলার ফলকে নিয়ামক ধরা হবে। প্রথম লিগে মোহামেডান জিতেছিল ৩৯ রানে। তাই ‘হেড টু হেডে’ আবাহনীকে টপকে লিগ জিতবে মোহামেডান।
এআরবি/এমএমআর/এএসএম