রাত্রির পলাশে আগুন
Advertisement
ঘুমিয়ে আছে নদীর চোখআলোর নিচে ঝরে পড়ে বিস্মৃত শিরিষের পাতাআমি সেই আগুনপোড়া পাথর—নিঃশ্বাসে উঠে আসে মৃত শহরের গন্ধ।
মাটি আজও জেগে থাকে ধূপের মতোআমার রক্তে বাজে এক নীরব শঙ্খতুমি জানো না বাংলাদেশ—আমি কতগুলো ছায়া ছিন্ন করেছি শুধু তোমার নিঃশ্বাস প্রহরায়!
তুমি ঘুমাও—বাংলাদেশরাত্রির প্রহরায় আমি নিঃশব্দ বাজনাআমার শিরায় হাঁটে পুরাতন যোদ্ধার ছায়াআমার ঘুমের ভেতর জেগে থাকে এক বুলেটের মানচিত্র।
Advertisement
সাপের মত গড়িয়ে আসে লোভনরম কণ্ঠে ডাকে প্রলোভনের দূতআমি চিনি তাদের, তাদের ঠান্ডা চাহনিতাদের পায়ের নিচে চাপা পড়ে যায় পতাকা।
তবু তুমি নিঃশ্বাস নাও—বাংলাদেশআমি জল হয়ে ছুঁয়ে আছি তোমার পাআমার আগুনে পুড়ে উঠুক প্রতিটি প্রতারকের ছায়া!
একদিন, কোনো নক্ষত্রহীন রাতেতুমি হয়তো দেখবে—পুকুরপাড়ে এক পলাশ ফুল জ্বলছে, নিঃশব্দে—জ্বলছে, শুধু তোমার আগুন রঙা সকালের অপেক্ষায়!
****
Advertisement
জল-কান্নার ভাষা
নদী জানে কান্নার ভাষা—সে শুনেছে কত শত বর্ষ ধরেনির্বাসিত মায়ের স্তব্ধ আর্তনাদআর সেই সব শিশুদের হাহাকারযারা ভোর দেখেনি কোনোদিন।
জলের ধারে গড়াগড়ি খেয়েছে ইতিহাসদাফন হয়েছে নামহীন শরীর—নদী চুপ থেকেছে;তবু তার ঢেউয়ে বাজে মর্সিয়ার সুর।
সে চেনে শহরের নীরব প্রতিবাদচেনে সেই কাঁধ, যাদের ওপরবয়ে যাওয়া লাশের ভার এখনো কাঁদে!
নদী কারও পক্ষে নয়তবু সে বয়ে যায়এক জাতির রক্তাক্ত অধ্যায়যা কোনো পাঠ্যবই বলে না।
সে জানে—একেকটি কণ্ঠস্বর হারিয়ে যাওয়ার মানেআর একেকটি বুক ভেঙে গেলেকীভাবে জন্ম নেয় প্রতিরোধের ঢেউ!
এসইউ/এএসএম