দেশজুড়ে

‘কেউ কিনতে এলো না চামড়া, মাটিতে পুঁতে ফেলেছি’

‘কেউ কিনতে এলো না চামড়া, মাটিতে পুঁতে ফেলেছি’

‘প্রতি বছর দুই-একশ টাকায় কোরবানির পশু চামড়া বিক্রি করে থাকি। এবার তো কেউ কিনতেই এলো না। পরে বাধ্য হয়ে মাটিতে পুঁতে ফেলেছি।’

Advertisement

কথাগুলো বলছিলেন চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ডোমখালী এলাকার বাসিন্দা সাদেক হোসেন।

তিনি বলেন, সরকার এবার কোরবানির পশুর চামড়ার দাম বাড়িয়েছে। উল্টো কেউ কিনতে আসেনি। শুধু আমি নয়, আমার এলাকার অনেকে চামড়া বিক্রি করতে পারেননি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিরসরাই উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভায় কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে মানুষ এবারও পড়েছে বিপাকে। বলতে গেলে পানির দরেই বিক্রি হয়েছে চামড়া। গরুর চামড়া সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা হয়েছে। ছোট গরুর চামড়া ১০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। চামড়ার বাজারে ধস নামায় বঞ্চিত হয়েছেন দুস্থরা। এতে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন।

Advertisement

মধ্যম ওয়াহেদপুর এলাকার নিজাম উদ্দিন ও আবু জাফর বলেন, এবার সারাদিন চলে গেলেও কেউ চামড়া ক্রয় করতে আসেনি। পরে মাদরাসায় দিয়ে দিয়েছি। শুধু আমরা নয়, আমাদের এলাকার অনেকে চামড়া এতিমখানায় দিয়েছে।

পাইকারিভাবে চামড়া ক্রয় করা হারুন অর রশিদ বলেন, উপজেলায় বেশির ভাগ এলাকায় গরুর চামড়া সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এখন কিনে আমরা বিপাকে। দুপুরের পর থেকে বাজারে নিয়ে বসে আছি, কেউ জিজ্ঞেসও করছে না। মনে হয় লোকসান গুনতে হবে।

উপজেলার করেরহাট ইউনিয়ন অলিনগর এলাকার নবী উল্লাহ জানান, তিনি ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা দামের গরু কোরবানি দিয়েছেন। তার গরুর চামড়া বিক্রি করেছে মাত্র ২৫০ টাকায়।

বারইয়ারহাট পৌরসভার জামালপুর এলাকার নুরুল আনোয়ার জানান, তাদের এলাকায় গত বছরের মতো এবারও কেউ চামড়া কিনতে না যাওয়ায় স্থানীয় লোকজন মাদরাসায় দিয়ে দিয়েছে।

Advertisement

তিনি আরও জানান, তাদের এলাকায় সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা দরে চামড়া বিক্রির খবর শোনা গেছে।

বড়তাকিয়া বাজারের চামড়া ব্যবসায়ী নুর উদ্দিন জানান, তিনি প্রায় ৬০০ চামড়া কিনেছেন। প্রতি পিস চামড়া ১০০-৩০০ টাকা দরে কিনেছেন। তার সবগুলো চামড়াতে শ্রমিক দিয়ে লবণ যুক্ত করতে হবে। এতে পরিবহন খরচ ও শ্রমিকের পারিশ্রমিকের কারণে চামড়ার ক্রয়মূল্য বেড়ে যাবে।

এর আগে ঢাকার বাইরে লবণযুক্ত চামড়ার সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ১৫০ টাকা।

এম মাঈন উদ্দিন/জেডএইচ/জেআইএম