রাজধানীর মিরপুরে এক মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন সুলাইমান হোসেন। পরিবারসহ থাকেন ঢাকাতেই। কোরবানিও করেছেন এখানে। আজ রোববার সকালে দেখা গেলো দুই হাতে দুই ব্যাগ নিয়ে বের হয়েছেন। কোরবানির মাংস নিয়ে আজ গ্রামের বাড়ি নড়াইল যাচ্ছেন সুলাইমান।
Advertisement
কোরবানির ঈদের পরদিন সুলাইমানের মতো অনেককেই যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদসহ অন্যান্য টার্মিনাল থেকে বাসে করে বাড়ি যাচ্ছেন। আবার অনেকেই ঢাকায় ঈদ করে আজ স্বজনদের বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছেন। ফলে ভোর থেকেই টার্মিনালগুলোতে আসা শুরু করেছে মানুষ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীর উপস্থিতিও বাড়ছে, এতে যানবাহবন সংকট দেখা দিয়েছে।
রোববার (৮ জুন) সকাল ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ী বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের পরদিনও রাজধানী ছেড়ে বাড়ি ছুটছে মানুষ। তবে সে তুলনায় পর্যাপ্ত যানবাহন না থাকায় যানবাহনের অপেক্ষায় অনেককেই রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। এই সুযোগে বেশি ভাড়া নিচ্ছে বিভিন্ন পরিবহন।
কথা হয় সাকুরা পরিবহনের ম্যানেজার আবিদ হোসেনের সঙ্গে। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ঈদের আগের দিন শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত যাত্রীর ব্যাপক চাপ ছিল। এরপর চাপ কমে আসে। আজ আবার যাত্রীর চাপ বেড়েছে। এরমধ্যে অনেক বাসের চালক ঈদের ছুটিতে গেছেন। কেউ কেউ হয়তো বুঝতে পারেননি আজ সকালে যাত্রীর চাপ বাড়বে। সব মিলিয়ে গাড়ির সংকট দেখা দিয়েছে। কিছুক্ষণ পর হয়তো এ সংকট থাকবে না।
Advertisement
সকাল থেকে দেখা গেছে, বিভিন্ন জেলা থেকে রাজধানীতে আসা বাসগুলোতে খুব বেশী যাত্রী নেই। তিশা পরিবহনের এক বাসে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থেকে ব্যাগ ভর্তি মাংস নিয়ে ঢাকায় এসেছেন হাফিজা খাতুন। কোরবানির মাংস নিয়ে মিরপুরে যাবেন মেয়ের বাসায়। জাগো নিউজকে তিনি জানান, ছেলে পুলিশে চাকরি করে, মেয়ে থাকে মিরপুরে। কোন বাসে যাবেন সেটাও জানেন না ঠিকমতো। একজনের সহায়তায় মিরপুরগামী বাসে ওঠেন তিনি।
আরও পড়ুনঈদের দ্বিতীয় দিনেও চলছে পশু কোরবানি‘৮০০ টাকা হলেও কোরবানির গরুর গোস্ত তো কিনলাম’যাত্রাবাড়ী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে আসা অধিকাংশ যাত্রীর হাতে বিভিন্ন ব্যাগের সঙ্গে কমবেশি কোরবানির মাংস ভর্তি আলাদা ব্যাগ দেখা যায়। কারও হাতে আবার প্লাস্টিকের বালতি, কেউবা রংয়ের বড় কৌটাতে (বালতির আকৃতি) করে মাংস নিয়ে বাসে উঠছেন।
বেসরকারি এক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন মনোয়ার হোসেন। ঈদের আগের দিন ছুটি পেলেও ঝামেলা এড়াতে ঈদের পরদিন পরিবার নিয়ে ফরিদপুরে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন। মাংসের ব্যাগ হাতে নিয়ে মনোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, যে সময় ছুটি পেয়েছি ওই সময় পরিবার নিয়ে যেতে হলে অনেক ঝামেলা পোহাতে হতো। এ জন্য আজ গ্রামে যাচ্ছি। গ্রামে বাবা-মা আছেন। কাছাকাছি শ্বশুরবাড়ি। ঢাকায় ছাগল কোরবানি দিয়েছি। ওই মাংস নিয়ে যাচ্ছি, পরিবারের সবার সঙ্গে মিলেমিশে খাবো।
ভোর থেকেই সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ী বাস টার্মিনাল যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। বরিশাল, খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ, রাজবাড়ী ও নড়াইল জেলার মানুষের আনাগোনা বেশি লক্ষ্য করা গেছে।
Advertisement
ফল বিক্রেতা আব্দুল মান্নান ভোর থেকে যাত্রীর চাপ দেখে জাগো নিউজকে বলেন, সকাল থেকে যাত্রী আসছে। ঈদের পরদিন অনেকে গ্রামে থাকা পরিবার, স্বজনদের বাড়ি যাচ্ছেন। অধিকাংশের হাতে কোরবানির মাংসের ব্যাগ।
আজ বাসের টিকিট সংকট না থাকলেও প্রায় সব রুটেই বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
এফএইচ/কেএসআর/জেআইএম