ধর্ম

আগে সালাম দেওয়ার ফজিলত

আগে সালাম দেওয়ার ফজিলত

ইসলামে সালামের মাহাত্ম

Advertisement

ইসলামে সালাম অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ আমল। রাসুল (সা.) বেশি বেশি সালাম দিতে উৎসাহিত করে বলেছেন সালাম মুসলমানদের পারস্পরিক সৌহার্দ ও ভালোবাসা বাড়ায়। নবিজি (সা.) বলেন, সেই সত্তার কসম যার হাতে আমার প্রাণ! আপনারা মুমিন না হলে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেন না আর পরস্পরে সৌহার্দ ও ভালোবাসা না রেখে আপনারা মুমিন হতে পারবেন না। আমি আপনাদের এমন কাজের কথা বলছি যা আপনাদের পারস্পরিক সৌহার্দ বৃদ্ধি করবে, নিজেদের মধ্যে বেশি বেশি সালাম আদান-প্রদান করুন! (সহিহ মুসলিম: ২০৩)

মানুষ সৃষ্টির পরপরই আল্লাহ তাআলা তাকে সালামের সৌজন্য শিক্ষা দিয়েছেন। মানুষের মধ্যে প্রথম সালাম দিয়েছিলেন প্রথম মানুষ হজরত আদম (আ.)। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, আল্লহ তাআলা আদমকে (আ.) সৃষ্টি করলেন। এরপর তাকে বললেন, যাও, ফেরেশতাদের সালাম দাও। উত্তরে তারা তোমাকে কী বলে তা ভালো করে শোনো। এটিই হবে তোমার এবং তোমার সন্তানদের অভিবাদন।

আদম (আ.) ফেলেশতাদের কাছে গিয়ে তাদের সালাম দিলেন, ‘আসসালামু আলাইকুম’ অর্থাৎ আপনাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। উত্তরে ফেরেশতারা বললেন, ‘আসসালামু আলাইকা ওয়া রহমাতুল্লাহ’ অর্থাৎ আপনার ওপর শান্তি ও আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক। ফেরেশতারা ‘ওয়া রাহমাতুল্লাহ’ বা ‘আল্লাহর রহমতও বর্ষিত হোক’ বৃদ্ধি করলেন। (সহিহ বুখারি: ৬২২৭)

Advertisement

আগে সালাম দেওয়ার ফজিলত

দুইজন মুসলমানের মধ্যে দেখা হলে যে আগে সালাম দেয়, সে বেশি উত্তম, আল্লাহর বেশি নৈকট্যপ্রাপ্ত। আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত নবিজি (সা.) বলেন, মানুষের মধ্যে আল্লাহর বেশি নৈকট্যপ্রাপ্ত সে, যে প্রথম সালাম দেয়। (সুনানে আবু দাউদ: ৮৫৮)

আরেকটি বর্ণনায় এসেছে, কোনো এক সাহাবি নবিজিকে (সা.) জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! দুইজন ব্যক্তির মধ্যে দেখা হলে তাদের মধ্যে কে আগে সালাম দেবে? নবিজি (সা.) বললেন, যে মহান আল্লাহর বেশি নৈকট্যপ্রাপ্ত, সে আগে সালাম দেবে। (সুনানে তিরমিজি: ৩৬৯৪)

সালামের উত্তর দেওয়া ওয়াজিব

কোনো মুসলমান সালাম দিলে তার সালামের উত্তর যথাযথভাবে উচ্চারণ করে এবং সালামদাতাকে শুনিয়ে দেওয়া ওয়াজিব। আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমাদেরকে যখন অভিবাদন করা হয়, তখন তোমরা তার চেয়ে উত্তম প্রত্যাভিবাদন করবে অথবা তার অনুরূপ করবে। (সুরা নিসা: ৮৬)

এ আয়াতে ‘অভিবাদন’ বলে সালাম উদ্দেশ্য। আয়াতের মর্ম হলো কেউ সালাম দিলে আরও উত্তম শব্দে সালামের জবাব দিতে হবে। অর্থাৎ ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলে সালাম দিলে ‘ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ’ বলে এবং ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ’ বলে সালাম দিলে ‘ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু’ বলে সালামের জবাব দিতে হবে।

Advertisement

যদি আরও উত্তম শব্দে জবাব দেওয়া না যায়, তবে অন্তত সালামদাতা যে শব্দে সালাম দিয়েছে, অনুরূপ শব্দে জবাব দিতে হবে। অর্থাৎ ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলে সালাম দিলে জবাবে অন্তত ‘ওয়ালাকুমুস সালাম’ বলতে হবে।

ওএফএফ/এমএস