মাদারীপুরের কালকিনিতে পাঁচদিনের ব্যবধানে দুই শিশু নিখোঁজ হয়েছে। নিখোঁজের ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুর পর্যন্ত ওই দুই শিশুর কাউকেই উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। সন্তান হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে তাদের পরিবার।
নিখোঁজ দুই শিশু হলো মাদারীপুরের কালকিনি পৌর এলাকার কাশিমপুর গ্রামের সৌদি প্রবাসী নাসির মৃধার মেয়ে নাছিমা আক্তার (৮) ও একই উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চর জায়গির গ্রামের দুবাই প্রবাসী রেজাউল করিম বাবুর মেয়ে ইসরাত (৮)। তারা দুজনে স্থানীয় মাদরাসার তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী।
পুলিশ, স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (১৪ জুন) রাতে শিশু নাছিমা আক্তার তার মা ময়না বেগমের সঙ্গে প্রতিবেশী শিপন বেপারীর গায়েহলুদের অনুষ্ঠানে যায়। বান্ধবীদের সঙ্গে নেচে-গেয়ে সময় কাটায় সে। পাশেই নানি আয়মুন নেছার ঘরে মেয়েকে ঘুমাতে বলে মা রাত ১১টার দিকে নিজ বাড়িতে চলে যান। এরপরই নিখোঁজ হয় নাছিমা। এ ঘটনায় কালকিনি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। এ ঘটনার ছয়দিন হলেও এখন পর্যন্ত শিশুটির কোনো সন্ধান মেলেনি।
Advertisement
নাছিমার খালা সাবিনা বেগম বলেন, গায়েহলুদের অনুষ্ঠান থেকে আমার ভাগিনিকে কে বা কারা নিয়ে গেছে কিংবা কেউ ষড়যন্ত্র করে মেরে ফেলেছে কিনা, কিছুই বলতে পারছি না। আমরা এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনের দাবি জানাই।
প্রতিবেশী মো. নিজামউদ্দিন বলেন, আমরা নিখোঁজ নাসিমার সন্ধান চাই। আশপাশের পুকুর-ডোবা ও বাড়িঘর তল্লাশি চালানো হয়েছে, কিন্তু পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে কালকিনি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) পল্লব কুমার সরকার বলেন, গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়িয়ে শিশুটিকে উদ্ধারে কার্যক্রম চলছে। এর আগে জেলা ও থানার পুলিশের বিভিন্ন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে এসেছেন। পরিবার থেকে কাউকে সন্দেহ করছে না। বিষয়টি পুলিশ গভীরভাবে তদন্ত করছে।
এদিকে বুধবার (১৮ জুন) সকালে মাদরাসায় যাওয়ার পথে কালকিনি উপজেলার চর জায়গির গ্রামের দুবাই প্রবাসী রেজাউল করিম বাবুর মেয়ে ইসরাত নিখোঁজ হয়। ওই শিশুটিকেও এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
নিখোঁজ ইসরাতের বাবা রেজাউল করিম বাবু মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আমার মেয়ে মাদরাসায় যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়েছে। তাই আমি বিদেশ থেকে দ্রুত চলে আসছি। আমি আমার মেয়েকে খুঁজে পেতে প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাই। আমি দেশে এসেই থানায় অভিযোগ করবো।’
Advertisement
এদিকে দুই শিশু নিখোঁজের ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের স্কুল-মাদরাসায় দিতে ভয় পাচ্ছেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমারও এই বয়সের দুটি সন্তান আছে। তারাও মাদরাসায় পড়ে। তাদের মাদরাসায় দিতে ভয় লাগছে। আমরা আতঙ্কে আছি।’
কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম সোহেল রানা বলেন, নাছিমার খোঁজে পুলিশ কাজ করছে। তবে শিশু ইসরাত নিখোঁজের ব্যাপারে কেউ লিখিত অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/এসআর/জিকেএস