দেশজুড়ে

কীর্তিনখোলার তীরে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে এপিবিএনের নার্সারি

কীর্তিনখোলার তীরে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে এপিবিএনের নার্সারি

বরিশাল নগরীর কোলঘেঁষে বয়ে চলা কীর্তনখোলা নদীর তীরে ৩০ গোডাউন এলাকায় গড়ে উঠেছে এক নার্সারি। নিজেদের উদ্যোগে নার্সারিটি গড়ে তুলেছেন আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যরা। এখানে রয়েছে ফুল, ফলদ ও বনজ গাছের সমাহার। নার্সারিটির সৌন্দর্য পরিবেশপ্রেমীদের নজর কেড়েছে।

Advertisement

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই উদ্যোগের নেতৃত্বে রয়েছেন বরিশাল ১০ এপিবিএনের কমান্ডিং অফিসার অতিরিক্ত ডিআইজি আবু আহাম্মদ আল মামুন। তার উদ্যোগে প্রায় এক একর জমিতে বিস্তৃত এই নার্সারির যাত্রা শুরু হয় ২০২৪ সালের ১৭ মে। একসময় জঙ্গলে ভরা অবহেলিত এই জায়গা এখন হাজারও চারাগাছ, পাখির কলতান এবং পুলিশ সদস্যদের স্বেচ্ছাশ্রমে সবুজে ঘেরা এক মনোরম স্থানে রূপান্তরিত হয়েছে।

কীর্তনখোলা নদীর তীরে ঘুরতে আসা খালিদ সাইফুল্লাহ বলেন, ‌‘নদীর তীরে ঘুরতে গিয়ে হঠাৎ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের গেটে একটি নার্সারির ব্যানার চোখে পড়ে। পরে সেখানে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত লেখা দেখে ভেতরে প্রবেশ করে চোখ জুড়িয়ে যায়। নার্সারি ঘুরে হাজারও প্রজাতির বিভিন্ন ফুল, ফলদ ও বনজ গাছের সমাহার দেখে ভালোই লেগেছে।’

আরেক দর্শনার্থী নুরুজ্জামান বলেন, ‘নগরীর বিভিন্ন নার্সারি ঘুরে দেখেছি কিন্তু অন্যান্য নার্সারির তুলনায় এখানে গাছের চারার দাম কিছুটা কম। তাই কয়েকটি ফলদ চারা কিনে নিয়েছি।’

Advertisement

এপিবিএনের উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল আলিম বলেন, ‘নার্সারিটি এপিবিএন সদস্যদের জন্য মানসিক প্রশান্তির আশ্রয়স্থলও। কাজ শেষে সময় পেলেই নার্সারিতে সময় কাটাই। এটি আমাদের আনন্দ দেয়।’

কথা হয় বরিশাল ১০ এপিবিএনের কমান্ডিং অফিসার অতিরিক্ত ডিআইজি মামুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘রুটিন দায়িত্বের পাশাপাশি ইচ্ছা থাকলে গঠনমূলক কাজ করা সম্ভব। ফাঁকা জায়গাগুলো দেখে ভাবলাম, ফলদ গাছ লাগিয়ে পরিবেশ ও মানুষের উপকার করা যায়। তখনই নার্সারির পরিকল্পনা করি। এখন নার্সারিতে আম, লিচু, পেয়ারা, আতা, কাঁঠালসহ বিভিন্ন দেশি ফলগাছের প্রায় ১০ হাজার চারা রয়েছে। এই চারাগুলো শুধু পরিবেশ রক্ষায় নয়, স্থানীয়দের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে সরবরাহ করা হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, নার্সারিতে ২০০ থেকে চার হাজার টাকার মধ্যে ফলদ ও ফুলের চারা পাওয়া যায়। আমরা এমন চারা তৈরি করছি, যাতে রোপণের বছরেই ফল পাওয়া যায়। এছাড়া বিভিন্ন জাতের চারা সংরক্ষণের চেষ্টা করছি। তিনি সবাইকে গাছ লাগাতে এবং অন্যদের উৎসাহিত করতে আহ্বান জানান।

পরিবেশবিদ শুভঙ্কর চক্রবর্তী এই প্রকল্পের প্রশংসা করে বলেন, অতীতে পরিবেশবান্ধব নয় এমন গাছ লাগানো হতো। কিন্তু এই নার্সারি পুষ্টির চাহিদা পূরণ করবে, এমনকী ভবিষ্যতে বিদেশি মুদ্রা আয়ের সম্ভাবনাও রয়েছে। এমন উদ্যোগ সব সরকারি প্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে দেওয়া উচিত।

Advertisement

শাওন খান/এসআর/জিকেএস