ব্যাংকখাত শক্তিশালী করতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় দুই প্রকল্পে বাংলাদেশকে ৯০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রতি ডলার ১২২ দশমিক ২০ টাকা ধরে এ অর্থের পরিমাণ ১০ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় অবস্থিত এডিবির সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় এ ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়।
ঋণের অর্থের ৫০ কোটি ডলার ব্যাংকখাত সংস্কারে এবং ৪০ কোটি ডলার জলবায়ু সহনশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে ব্যয় করা হবে।
ব্যাংকখাতে ৫০ কোটি ডলার
Advertisement
এডিবির অনুমোদিত ৫০ কোটি ডলারের নীতিভিত্তিক ঋণটি ‘ব্যাংকখাত স্থিতিশীলকরণ ও সংস্কার কর্মসূচি, উপ-প্রকল্প ১’র আওতায় দেওয়া হয়েছে। এ ঋণের মূল লক্ষ্য বাংলাদেশের ব্যাংকখাতের নিয়ন্ত্রণমূলক তত্ত্বাবধান, করপোরেট সুশাসন, সম্পদের গুণগত মান এবং সার্বিক স্থিতিশীলতা বাড়ানো। এ কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের তারল্য ব্যবস্থাপনা কাঠামো আরও কার্যকর হবে এবং ব্যাংকখাতের উল্লেখযোগ্য খেলাপি ঋণ সমাধানে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন ব্যাংক খাত সংস্কারে ৫০ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবিএডিবির প্রধান আর্থিকখাত বিশেষজ্ঞ সঞ্জীব কৌশিক জানান, এ অর্থ নিয়ন্ত্রক সংস্থার সক্ষমতা বাড়াতে, ব্যাংকখাতের মূলধন বাড়াতে এবং ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোগের জন্য সাশ্রয়ী অর্থায়নের সুযোগ উন্নত করতে সহায়ক হবে। বাংলাদেশের ব্যাংকখাত মূলত শিল্প ও বৃহৎ ঋণগ্রহীতাদের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় সাধারণ মানুষ প্রায়শই ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভর করে। এ ঋণ কার্যকর আর্থিক মধ্যস্থতা নিশ্চিত করবে এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তির হার বাড়াতে সাহায্য করবে।
জলবায়ু সহনশীলতায় ৪০ কোটি ডলারএডিবির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুমোদন হলো ‘জলবায়ু-সহনশীল অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন কর্মসূচির’ দ্বিতীয় ধাপের জন্য ৪০ কোটি ডলার ঋণ।
এ কর্মসূচিতে ফ্রান্সের এজেন্স ফ্রান্সাইজ ডি ডেভলপমেন্ট (এএফডি) থেকে প্রায় ১১৩ মিলিয়ন ডলার এবং এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইডি) থেকে অতিরিক্ত ৪০০ মিলিয়ন ডলার সহ-অর্থায়ন রয়েছে। এ ঋণের মাধ্যমে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় তার সক্ষমতা বাড়াতে, জলবায়ু গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে নির্গমন কমাতে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নকে সহায়তা করতে পারবে।
Advertisement
এডিবির জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ সমীর কাঠিওয়াড়া বলেন, এ কর্মসূচি সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় বাড়াবে। জলবায়ু অর্থায়ন সংগ্রহে বাধা দূর করবে এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অভিযোজন ও প্রশমন প্রচেষ্টা জোরদার করবে। কর্মসূচির আওতায় ‘বাংলাদেশ জলবায়ু উন্নয়ন অংশীদারত্ব’ প্রতিষ্ঠিত হবে। যা জলবায়ু অর্থায়ন সুরক্ষিত করতে এবং সরকারি মন্ত্রণালয়গুলোকে জলবায়ু প্রকল্পগুলো আরও কার্যকরভাবে তৈরি, বাস্তবায়ন ও মূল্যায়নে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, এছাড়াও এটি স্থানীয় যুব-সম্পর্কিত এবং লিঙ্গ সংবেদনশীল অভিযোজন ব্যবস্থাগুলোকে শক্তিশালী করবে এবং শস্য বিমা ও দুর্যোগ ঝুঁকি বিমার মতো উপকরণসহ একটি জাতীয় দুর্যোগ ঝুঁকি অর্থায়ন কৌশলকে সমর্থন করবে।
এমওএস/এমকেআর/জেআইএম