দেশজুড়ে

কুমিল্লায় গ্যাস সংকটে ভোগান্তিতে ৫ লাখ গ্রাহক

কুমিল্লায় গ্যাস সংকটে ভোগান্তিতে ৫ লাখ গ্রাহক

কুমিল্লাজুড়ে গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বাসাবাড়ি থেকে শুরু করে হোটেল, রেস্তোরাঁ, সিএনজি ফিলিং স্টেশন এবং শিল্পকারখানায় গ্যাস সরবরাহ প্রায় বন্ধ। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন প্রায় ৫ লাখ গ্রাহক।

Advertisement

এদিকে গ্যাস সংকটে বিপাকে পড়েছেন সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন পরিবহনের চালকরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে গ্যাস না পেয়ে চালকদের হতাশ হয়ে ফিরে যেতে দেখা গেছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকাল থেকে কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড়, রাজগঞ্জ, পুলিশ লাইন, বাগিচাগাঁও, অশোকতোলা, ছোটরা, আশ্রাফপুর, চর্থা, মুন্সেফবাড়িসহ নগরীর অধিকাংশ আবাসিক এলাকায় গ্যাস সংকট দেখা দেয়। একই অবস্থা শহরতলীর আশপাশের গ্রাম ও উপজেলা শহরে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বঙ্গোপসাগরের উত্তাল ঢেউয়ের কারণে চট্টগ্রামের মহেশখালীতে এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই সংকট তৈরি হয়েছে। তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বোঝাই জাহাজগুলো সরবরাহ কেন্দ্র পর্যন্ত ভিড়তে না পারায় চাহিদা মোতাবেক সরবরাহ সম্ভব হচ্ছে না।

Advertisement

আরও পড়ুন: 

গ্যাসের চাপ কম, গ্রাহকদের বেড়েছে ভোগান্তি দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় কমেছে গ্যাস সরবরাহ

গ্যাস সংকটের কারণে কুমিল্লা ইপিজেড, বিসিক শিল্পনগরীসহ জেলার বিভিন্ন ছোট-বড় শিল্পকারখানায় পণ্য উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

কুমিল্লায় বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির প্রায় ৫ লাখ গ্রাহক। আবাসিক, বাণিজ্যিক ও শিল্প খাতে সর্বত্রই একই ভোগান্তি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গ্যাস সংকটের কারণে অনেককে লাকড়ির চুলায় রান্নার কাজ সারতে হচ্ছে। আর যাদের লাকড়ির চুলা নেই ওই সব বাসিন্দাদের লাইনে দাঁড়িয়ে হোটেল ও রেস্তোরাঁ থেকে খাবার সংগ্রহ করতে হয়েছে।

Advertisement

এছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, কুমিল্লা-নোয়াখালী, কুমিল্লা-চাঁদপুর ও কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের আশপাশসহ জেলার সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোতে দীর্ঘ লাইন দেখা দেয় বিভিন্ন যানবাহনের।

খদিজা নামে এক গৃহিনী বলেন, সকালে নাস্তা বানাতে গিয়ে দেখি গ্যাসের চুলা মিটমিটিয়ে জ্বলছে। ৩০ মিনিটে দুটা রুটি বানিয়েছি। পরে নিরুপায় হয়ে দোকান থেকে নাস্তা এবং দুপুরের খাবার সংগ্রহ করি। এতেও লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।

চালকরা জানান, গ্যাস ছাড়া তেলে গাড়ি চালানো সম্ভব না। কারণ তেলের দাম বেশি। তাই বাধ্য হয়ে গ্যাসের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে কুমিল্লার বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের প্রকৌশলী মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এখানে প্রায় ৫ লাখ গ্রাহক। আবাসিক, বাণিজ্যিক ও শিল্পখাতে সর্বত্রই একই ভোগান্তি। বিশেষ করে কুমিল্লা নগরী ও আশপাশের এলাকাগুলোতে এই সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গোপসাগরের উত্তাল ঢেউয়ের কারণে চট্টগ্রামের মহেশখালীতে এলএনজি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কুমিল্লায় গ্যাসের সংকট দেখা দেয়। আশা করছি শুক্রবার সকাল থেকে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।

জাহিদ পাটোয়ারী/জেডএইচ/জিকেএস