অর্থনীতি

হোপ মার্কেট: জামা, জুতা, কসমেটিকস সবই পাওয়া যায় যেখানে

হোপ মার্কেট: জামা, জুতা, কসমেটিকস সবই পাওয়া যায় যেখানে

রাজধানীর মিরপুর এলাকায় কেনাকাটার জন্য মার্কেট বা দোকানের সংখ্যা কম নয়। তবে এরই মধ্যে পোশাক এবং গৃহস্থালীর নিত্য প্রয়ােজনীয় জিনিস কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতাদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে হোপ মার্কেট।

Advertisement

মিরপুর-১০ নম্বর সেকশনের বি ব্লকে হোপ স্কুল সংলগ্ন প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে গড়ে উঠেছে হোপ মার্কেট। রোদ, বৃষ্টি যাই হোক না কেন, বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগমে জমজমাট থাকে এই মার্কেট।

জামা, জুতা, ব্যাগ থেকে শুরু করে ঘর সাজানোর সামগ্রী, শিশুদের খেলনা, রান্নাঘরের তৈজসপত্র সবই মেলে এই মর্কেটে।

হোপ স্কুলের অবস্থান মিরপুর-১০ নম্বর বি ব্লকের ১৯ নম্বর সড়কে। এই স্কুল সংলগ্ন সড়কেই দেড়যুগ আগে এই মার্কেটের গোড়াপত্তন হয়। বর্তমানে ১৯ নম্বর সড়ক ছাড়াও ১০ নম্বর বি ব্লকের ১১/১, ১৮ নম্বর সড়ক ও সি ব্লকের ৬, ৭, ৮ ও ১৪ নম্বর সড়ক ও ফুটপাতে বসেছে শতাধিক স্থায়ী ও অস্থায়ী দোকান।

Advertisement

শুক্রবার (২০ জুন) বেলা ১১টায় গিয়ে বিক্রেতাদের দোকান খুলতে দেখা যায়। কেউ কেউ দোকান সাজাচ্ছিলেন। কিছু দোকানে বেচাকেনা এরইমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। বেশিরভাগ দোকান ছিল বন্ধ।

আরও পড়ুন চালের খুচরা বাজার চড়া, দাম কম মুরগি-ডিমের আগামী ১ জুলাই থেকে বিএটিবিসির ঢাকার কারখানা বন্ধ

বিক্রেতারা জানান, এই মার্কেট জমজমাট হয় বিকেল ও রাতে। তখন মার্কেট সংলগ্ন সড়কগুলোতে পা রাখার জায়গা থাকে না। বিক্রেতারাও দম ফেলার সুযোগ পান না।

১১ নম্বর সড়কের ফুটপাতে প্যান্ট ও ওয়ানপিস জামা বিক্রি করতে দেখা যায় শরিফুল ইসলামকে। এই মার্কেটে ৬ বছর ধরে ব্যবসা করেন তিনি।

শরিফুল ইসলাম বলেন, এই এলাকার আশপাশে গোটা দশেক স্কুল, কলেজ ও কোচিং সেন্টার আছে। অভিবাবক ও শিক্ষার্থীরা এই মার্কেটের বড় ক্রেতা। মার্কেট বড় হয়েছে, সব জিনিস পাওয়া যায় কম দামে। এ কারণে মিরপুর, কাজীপাড়া, কচুক্ষেত, ক্যান্টনমেন্ট থেকেও ক্রেতারা আসেন। স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় ৫০০-৬০০ দোকান হবে পুরো এলাকায়।

Advertisement

তিনি বলেন, সামনেই মেট্রোরেল স্টেশন আছে। দূর থেকেও অনেকেই আসছেন এখানে। বিভিন্ন ধরণের রেস্তোরাঁ আছে। সবমিলিয়ে এখন মার্কেট ভালো চলছে। বেচাকেনা সামাল দিতে অনেকেই একদামে জামা-কাপড় বিক্রি করেন এখানে।

একদামে বেচাকেনা করতে দেখা যায় বিভিন্ন দোকানে। কিছু দোকানে একদামে বেচাকেনা হয় এমন ব্যানারও টানানো ছিল।

মেয়েদের জুতা বিক্রেতা মিজান আহমেদ বলেন, একদামে বেচাকেনা করাই ভালো। ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ের সময়ই বাচে। বিক্রেতারাও সামান্য লাভে দ্রুত বিক্রি করতে পারে। ক্রেতাও সন্তুষ্ট থাকে।

বাচ্চাদের জন্য জামা কিনতে দেখা যায় নারায়ণ কুমারকে। তিনি মিরপুর-১১ নাম্বার প্যারিস রোডের বাসিন্দা।

তিনি বলেন, এখান থেকেই সবসময় কেনাকাটা করি। দাম অন্যান্য মার্কেটে যেমন, এখানেও তেমন। বাসা কাছে দেখে এখান থেকেই কেনাকাটা করি। আমার স্ত্রীও এখান থেকে কেনাকাটা করেন।

মার্কেট ঘুরে দেখা যায় ৪০০ থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায় মেয়েদের নানা রকমের জামা। বাহারি নকশার সুতি, লিনেন ও জর্জেটের কুর্তা, টপস, ফ্রক ও কামিজ। এ ছাড়া কাফতান, টপ ও লং শার্ট পাওয়া যাবে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকায়। স্লিপার থেকে হিল জুতা, কেডস জুতা পাওয়া যায় ৩০০-১৫০০ টাকায়। মেয়েদের গ্যাবার্ডিন, জিনস ও ডেনিমের প্যান্ট পাওয়া যাবে ২০০ থেকে ৭৫০ টাকায়। বিভিন্ন ধরনের হাতব্যাগ ও পার্স পাওয়া যায় ৩০০ থেকে ৮০০ টাকায়। তরুণ-তরুণীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় লম্বা আকৃতির টোটব্যাগ। বিভিন্ন ধরনের কথা লেখা ও ছবি আঁকা টোটব্যাগ পাওয়া যায় ২০০ থেকে ৪০০ টাকায়।

হোপ মার্কেটে কয়েকটি ভ্যানে সিরামিকের বিভিন্ন জিনিস বিক্রি হয়। বিভিন্ন ধরনের মগ ও কাপ পাওয়া যায় ১০০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে। হাফপ্লেট ও প্লেটের দাম ১০০ টাকা থেকে শুরু। ছোট থেকে মাঝারি আকারের বাটির দাম পড়বে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। ১০০-১০০০ টাকায় পাওয়া যায় বিভিন্ন ধরনের পাপোশ ও ঘর সাজানোর বিভিন্ন আর্টিফিশিয়াল ফুল। মেয়েদের নানান ধরনের কসমেটিকস ও অর্নামেন্টস পাওয়া যায় ৩০-৫০০ টাকায়।

ছোট ছোট কানের টপ পাওয়া যাবে ৩০ থেকে ১০০ টাকায়, অ্যান্টিক ও পাথরের মালার দাম পড়বে ১০০ থেকে ২৫০ টাকা। কাচ ও অ্যান্টিকের চুড়ির দাম যথাক্রমে ৫০ টাকা ও ১০০ টাকা। বিভিন্ন দামে কাচের চুড়ি পাওয়া যায়। ১৫০-৭০০ টাকায় বাচ্চাদের জামা, প্যান্ট পাওয়া যায়। এছাড়া বড়দের শার্ট, প্যান্ট ও জুতা পাওয়া যায় এখানে।

এসএম/এএমএ/এএসএম