পরিচয়ের দুই বছর পর বিয়ে করেন আনিসুর রহমান ও মারুফা আক্তার। বিয়ের মাত্র ১৭ দিনের মাথায় ট্রেন দুর্ঘটনা জীবন কেড়ে নিলো আনিসের। এতে শুরুতেই শেষ হলো মধুর দাম্পত্য জীবন।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাত ৮টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইনের চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার আরশিনগর ফিউচার পার্ক অ্যান্ড রিসোর্ট সংলগ্ন এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় নিহত তিনজনের একজন আনিস।
আনিসের বাড়ি মিরসরইয়ের ৩ নম্বর জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যম সোনাপাহাড় গ্রামের রূপনগরে। তিনি ওই এলাকার আবু তাহেরের ছেলে। বাড়ির অদূরের বিএসআরএম স্টিল মিল কারখানার ড্রাম ট্রাকচালক ছিলেন আনিস। গত ৩ জুন টাঙ্গাইলের মেয়ে মারুফা আক্তারকে বিয়ে করেন তিনি।
স্বামীর মৃত্যুর পর মারুফার মা-বাবা শুক্রবার (২০ জুন) সকালে তাকে টাঙ্গাইলে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান।
Advertisement
স্বামীহারা মারুফা আর্তনাদ করে বলছিলেন, ‘আমার এ জীবন রেখে লাভ কী, আমি এই জীবন আর রাখবো না। আমাকে ছেড়ে কেন চলে গেলো আনিস?’
আরও পড়ুন: মিরসরাইয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে ৩ জন নিহতস্বজনরাসহ ঘরের খাটে বসে অঝোঁরে কাঁদছিলেন আনিসের বাবা আবু তাহের। এসময় তিনি বলেন, ‘১৭ দিনের মাথায় আমার মেয়ের মতো বউমা বিধবা হয়ে গেলো। আমি বউমাকে সান্ত্বনা দেওয়ার কোনো ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। আল্লাহ কেন আমাকে এমন শাস্তি দিলো। আমি কোনোভাবে বিষয়টি মানতে পারছি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলো আনিস। সেখানে পূর্বের লেনদেন শেষ করে শুক্রবার আনিসের নতুন গাড়িতে উঠার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই এভাবে চলে গেলো ছেলেটা।’
শুক্রবার (২০ জুন) সকালে উপজেলার ৩ নম্বর জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যম সোনাপাহাড় গ্রামের রূপনগর গিয়ে আনিসের পরিবারের সদস্যদের বিপর্যস্ত অবস্থায় দেখা যায়।
Advertisement
আনিস ছাড়াও ওই দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন মধ্যম সোনাপাহাড় গ্রামের রূপনগর টিলার অলি আহম্মদ মাদবার বাড়ির জিয়াউর রহমানের ছেলে রিয়াজ উদ্দিন (১৮) ও গনি আহম্মদের বাড়ির দিদারুল আলমের ছেলে আরাফাত হোসেন (১৮)। নিহতদের একজন আনিসের ট্রাকের হেলপার ও অন্যজনও একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেতন।
এম মাঈন উদ্দিন/এমএন/এএসএম