নামাজের জামাতে সামনের কাতারে ফাঁকা জায়গা থাকলে পেছনের কাতারে দাঁড়ানো নাজায়েজ। নবিজি (সা.) জামাতের কাতার পূর্ণ করে ও ফাঁকা না রেখে দাঁড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন। আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা কাতার সোজা কর। কাঁধসমূহকে বরাবর রাখ। ফাঁকা জায়গা পূর্ণ কর। তোমাদের ভাইদের হাতে তোমরা নরম হয়ে যাও এবং শয়তানের জন্য ফাঁকা জায়গা ছেড়ে দিয়ো না। যে কাতার মিলিয়ে দেয় আল্লাহ তাআলাও তাকে মিলিয়ে দেন। যে কাতার বিচ্ছিন্ন করে আল্লাহ তাআলা তাকে বিচ্ছিন্ন করে দেন। (সুনানে আবু দাউদ)
Advertisement
এরপরও কেউ যদি সামনে খালি রেখে পেছনের কাতারে দাঁড়ায়, তাহলে তার নামাজ হয়ে যাবে। পুনরায় নামাজ পড়তে হবে না।
আগে বেড়ে কাতার পূর্ণ করার ফজিলতনামাজের জামাতে যথা সম্ভব সামনে দাঁড়ানো, কাতারের ফাঁকা জায়গা পূরণ করার ফজিলত বর্ণিত হয়েছে বিভিন্ন হাদিসে। বারা ইবনে আজেব (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, আল্লাহ রহমত বর্ষণ করেন এবং ফিরিশতাগণ দোয়া করতে থাকেন তাদের জন্য যারা প্রথম কাতার মিলিয়ে (ব্যবধান না রেখে) দাঁড়ায়। আর যে পদক্ষেপে বান্দা কোনো কাতারের ফাঁকা জায়গা পূরণ করতে যায়, আল্লাহর কাছে অন্য কোনো পদক্ষেপ এর চেয়ে বেশি পছন্দনীয় নয়। (সুনানে আবু দাউদ)
অন্য বর্ণনায় এসেছে একবার আল্লাহর রাসুল (সা.) সাহাবিদের বললেন, তোমরা কি সেভাবে কাতারবদ্ধ হবে না যেভাবে ফেরেশতারা তাদের রবের সামনে কাতারবদ্ধ হন? সাহাবিরা বলেন, হে আল্লাহর রাসুল, ফেরেশতারা কীভাবে রবের সামনে কাতারবদ্ধ হন? জবাবে তিনি বলেন, তারা আগে প্রথম কাতার পূরণ করেন। পরবর্তী কাতারগুলোতেও ঘেঁষে ঘেঁষে ফাঁকা না রেখে দাঁড়ান। (সহিহ মুসলিম)
Advertisement
মসজিদে জামাতের প্রথম কাতারে নামাজ আদায় করার ফজিলত অপরিসীম। তাই নামাজ আদায়কারীদের সব সময় প্রথম কাতারে নামাজ আদায়ের জন্য উন্মুখ থাকা উচিত। যারা দ্রুত মসজিদে উপস্থিত হতে পারেন, তাদের উচিত প্রথম কাতারে বসা, পেছনে বসে না থাকা। নবিজি (সা.) একবার প্রথম কাতার থেকে পিছিয়ে থাকা সাহাবিদের লক্ষ করে বলেছিলেন, তোমরা সামনের কাতারে এগিয়ে এসো এবং আমার অনুসরণ করো, যেন তোমাদের পরবর্তী লোকেরা তোমাদের অনুসরণ করতে পারে। মানুষ পেছনে হটতে থাকলে আল্লাহও তাদের পিছিয়েই দেন। (সহিহ মুসলিম)
আরেকটি হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, মানুষ যদি আজান ও প্রথম কাতারের সাওয়াবের কথা জানতো এবং লটারি ছাড়া তা লাভের কোন উপায় না থাকতো তবে তারা এর জন্য লটারি করতো। যদি নামাজে দ্রুত মসজিদে উপস্থিত হওয়ার ফজিলত মানুষ জানতো, তবে তারা এর জন্য প্রতিযোগিতা করতো। ইশা ও ফজরের সওয়াব যদি তারা জানতো, তবে তারা এ দুই নামাজের জন্য হামাগুড়ি দিয়ে হলেও মসজিদে আসতো। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)
ওএফএফ/জিকেএস
Advertisement