খ্যাতিমান ফটোগ্রাফার চঞ্চল মাহমুদ। শোবিজে মডেলিং ক্যারিয়ার শুরু করতে আসা অনেকের শুরুর ফটোসেশন হয়েছে তার হাত ধরেই। অনেকেই তার হাতের তোলা ছবি বিজ্ঞাপনী সংস্থায় জমা দিয়ে হয়ে গেছেন মডেল, অভিনেতা-অভিনেত্রী।
Advertisement
সেই তালিকায় আছেন- অমর নায়ক সালমান শাহ, মৌসুমী, শাবনূর, পপি থেকে শুরু করে নোবেল, সাদিয়া ইসলাম মৌ, তানিয়া আহমেদ, সুইটি, বিপাশা হায়াত, আফসানা মিমিসহ অসংখ্য অভিনেতা ও মডেল। শুধু ছবি তুলেই নয়, চঞ্চল অনেকের জন্য সুপারিশ করেছেন শোবিজের নানামুখী কাজ পাওয়ার জন্য। সেই সুপারিশে অনেকে কাজ পেয়েছেন, অনেকেরই ভাগ্য বদলেছে। পেয়েছেন খ্যাতি-অর্থ ও প্রতিষ্ঠা।
অথচ এই রঙিন জীবনের আড়ালে থাকা মানুষটি পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন দীর্ঘদিন রোগে ভুগে, অনেকটা অবহেলায়। প্রায় ৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে হার্টের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন তিনি। শুক্রবার (২০ জুন) রাত ৯টার দিকে ঢাকার ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়েছে।
চঞ্চল মাহমুদের মৃত্যু শোবিজে শোক নামিয়েছে। তেমনি বাড়িয়েছে এক করুণ বাস্তবতার আলোচনাও। ক্যামেরার রঙে অনেকের জীবন যিনি রঙিন করেছেন সেই চঞ্চল মাহমুদের শেষ বিদায় হলো রঙহীন-ধূসর। এমন কি হওয়ার কথা ছিল কিংবা এমনটা কি হওয়া উচিত?
Advertisement
গেল কয়েক বছর ধরে ক্যানসার আক্রান্ত স্ত্রীসহ নিজের চিকিৎসা করতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছিলেন তিনি। যে চঞ্চল মাহমুদ বিভিন্ন কারণে অনেকের জন্য সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছেন সেই তিনি বারবার ফেসবুকে সহায়তা চেয়েও তেমন সাড়া পাননি। শেষ জীবনে অসুস্থাতার চেয়েও বেশি কষ্ট হয়তো তিনি হজম করেছেন চারপাশে স্বার্থপর আর অকৃতজ্ঞ মানুষ দেখে। মৃত্যুকালেও হাতে গোনা দু চারজন ছাড়া উল্লেখ করার মতো কাউকে পাশে পেলেন না চঞ্চল মাহমুদ।
বিষয়টি নিয়ে শোবিজে অনেক কথা হচ্ছে, ফিসফিস করে। তবে চঞ্চল মাহমুদের মৃত্যু বেশ জোরেশোরে আরেকবার মনে করিয়ে দিলো স্বার্থের এই পৃথিবী অকৃতজ্ঞতায় ভরপুর। শেষ শয্যায় শুয়ে বদলে যাওয়া মানুষের পৃথিবী দেখে একসময়ের প্রতাপশালী, রঙিন জীবনের কারিগর চঞ্চল মাহমুদ হয়ত বেদনাভরা হৃদয়ে এই গানটাই গুনগুন করেছেন- ‘এই দুনিয়া এখন তো আর সেই দুনিয়া নাই / মানুষ নামের মানুষ আছে দুনিয়া বোঝাই / এই মানুষের ভিড়ে আমার সেই মানুষ নাই...’
এলআইএ/এমএমএফ/জিকেএস
Advertisement