রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে শাহিনুর বেগম নামে এক নারী হত্যা মামলায় সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ইকবাল বাহারকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
Advertisement
শনিবার (২১ জুন) বিকেলে শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মো. জুয়েল রানার আদালত এই আদেশ দেন।
এর আগে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার ইন্সপেক্টর কাজী রমজানুল হক আসামিকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মোর্শেদ আলম শাহিন ও স্বপ্না খানম তার জামিন চেয়ে শুনানি করেন।
Advertisement
শুনানিতে আইনজীবীরা বলেন, হত্যা মামলায় কাউকে গ্রেফতার করতে হলে কিছু কারণ থাকতে হবে। আসামিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই মামলায় জড়ানো হয়েছে। যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। আসামি পুলিশের একজন সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি। তিনি অসুস্থ। এই মামলার সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা নেই। সব আসামি আইনের দৃষ্টিতে সমান। একই ক্যাটাগরির মামলায় সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী জামিন পেয়েছেন। গ্রেফতারের একদিনের মাথায় নায়িকা নুসরাত ফারিয়াও জামিন পেয়েছেন। তাই যে কোনো শর্তে তার জামিন প্রার্থনা করছি।
আরও পড়ুন সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ইকবাল বাহার আটকএ সময় রাষ্ট্রপক্ষ এই জামিনের বিরোধিতা করে। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ২০ জুন সন্ধ্যায় বেইলি রোডের একটি বাসা থেকে ইকবাল বাহারকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। তিনি এ মামলার এজাহারনামীয় ২৬ নং আসামি।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ২২ জুলাই রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানাধীন কাজলা ফুটওভার ব্রিজের নিচে ছাত্ররা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিল। ওই আন্দোলনে ভিকটিম শাহিনুর বেগম খাবার পানি সরবরাহ করতে থাকেন। সাধারণ ছাত্রদের কর্মসূচি চলাকালে মামলার এজাহারনামীয় আসামিদের নির্দেশে অন্যান্য আসামিরা আন্দোলকারীদের ওপর দেশীয় অস্ত্রসহ, সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ায় শেল, রাবার বুলেট ও গুলি বর্ষণ করেন। ভিকটিম শিক্ষার্থীদের পানি সরবরাহ করার সময় মাথায় গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
Advertisement
সেসময় আশপাশের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভিকটিমকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিকিৎসার জন্য দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় ভিকটিম এক মাস ৯ দিন পর মৃত্যুবরণ করেন। এই ঘটনায় ভিকটিমের মেয়ে হাবেজা আক্তার (৩৪) বাদী হয়ে শেখ হাসিনাসহ ২৯৭ জনের নাম উল্লেখ করে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় আরও অজ্ঞাতনামা ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
ইকবাল বাহার এর আগে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে তাকে অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে রাজারবাগ টিঅ্যান্ডআইএমে বদলি করা হয়। ২০১৯ সালে সেখান থেকে তিনি অবসরে যান।
এমআইএন/ইএ/জিকেএস