দেশজুড়ে

জামায়াত নেতাকে সরিয়ে চেয়ারম্যান পদ ‘দখল’ বিএনপিপন্থি মেম্বারের

জামায়াত নেতাকে সরিয়ে চেয়ারম্যান পদ ‘দখল’ বিএনপিপন্থি মেম্বারের

শরীয়তপুরের ডামুড্যায় সিড্যা ইউনিয়ন পরিষদে প্যানেল চেয়ারম্যানের পদ জোর করে বাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিএনপিপন্থি ইউপি সদস্য (মেম্বার) মোস্তাফিজুর রহমান রুবেল আকনের বিরুদ্ধে।

Advertisement

চেয়ারম্যান শারীরিক অসুস্থতায় দেশের বাইরে চলে গেলে তিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হতে পারবেন—এমন উদ্দেশ্যে কাজটি করা হয়েছে বলে দাবি আগের প্যানেল চেয়ারম্যান ও সিড্যা ইউপি জামায়াতের সেক্রেটারি আমির হোসেনের।

শনিবার (২১ জুন) বিকেলে জেলা শহরের জজ কোর্ট এলাকায় সাংবাদিকদের একটি অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ জানান তিনি।

সিড্যা ইউপি ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিড্যা ইউনিয়ন পরিষদে ইউপি সদস্যদের ভোটে ১ নম্বর প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন ইউপি সদস্য আমির হোসেন। আর ২ নম্বর প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আরেক ইউপি সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান রুবেল আকন। গত বছরের ১৫ অক্টোবর সিড্যা ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ আব্দুল হাদী জিল্লু ১ নম্বর প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য আমির হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানে পদে বসিয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশ চলে যান।

Advertisement

চিকিৎসা শেষে দীর্ঘ সাত মাস পর তিনি দেশে এলে তিনি তার নিজ দায়িত্ব বুঝে নেন। এখন তিনি পুনরায় চিকিৎসার জন্য বিদেশ চলে যাওয়ার কথা বললে বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) স্থানীয় বিএনপি নেতা কবির মীর, ডামুড্যা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহাদাৎ হোসেনসহ তার অনুসারীরা চেয়ারম্যানকে অবরুদ্ধ করেন। এসময় তারা বিএনপিপন্থি ইউপি সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান রুবেলকে ১ নম্বর প্যানেল চেয়ারম্যান বানিয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বানান বলে অভিযোগ করেন আগের প্যানেল চেয়ারম্যান আমির হোসেন।

ইউপি সদস্য ও ১ নম্বর প্যানেল চেয়ারম্যান আমির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, আমি জনপ্রতিনিধিদের ভোটে নির্বাচিত হিসেবে ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করেছি। নিয়ম অনুযায়ী চেয়ারম্যান অনুপস্থিত থাকলে আমি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের কথা। কিন্তু ইউপি সদস্য ও বিএনপি নেতা তাদের দলীয় ক্ষমতা এবং প্রভাব খাটিয়ে আমার অনুপস্থিতিতে আমাকে জোর করে সরিয়ে নিজেকে প্যানেল চেয়ারম্যান ঘোষণা করেছেন। এই ঘটনাটি শুধু আমার নয়, স্থানীয় গণতন্ত্র ও নির্বাচনের প্রতি মানুষের আস্থার ওপর সরাসরি আঘাত হানবে বলে মনে করি। আমি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে লিখিতভাবে অভিযোগ করবো।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত বিএনপিপন্থি ইউপি সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান রুবেল আকনকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

অভিযোগের বিষয়ে ডামুড্যা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘তার (আমির হোসেন) বিরুদ্ধে স্থানীয়দের অনেক অভিযোগ। তাই চেয়ারম্যান রুবেলকে প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছেন। তাছাড়া উনিতো ওইসময় উপস্থিত ছিলেন না। আমরা ওখানে গিয়েছিলাম স্থানীয় বিএনপির মধ্যে একটু ঝামেলা ছিল, সেটা মিটাতে।’

Advertisement

এ ঘটনায় সিড্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ আব্দুল হাদী জিল্লুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অসুস্থতার জন্য ঢাকায় অবস্থান করছেন বলে জানান। তবে এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে ডামুড্যা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাসরীন বেগম সেতু বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিধান মজুমদার অনি/এসআর/জেআইএম