জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী বাপ্পা মজুমদার ও তার ভাই পার্থ মজুমদারকে হুমকি দিয়েছিলেন গজলশিল্পী মেজবাহ আহমেদ। এ কথা জানিয়ে পার্থ মজুমদার তার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি স্ট্যাটাসও দিয়েছিলেন।
Advertisement
এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে মেজবাহ আহমেদের এমন আচরণের জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন কেউ কেউ। অনেকে এ ধরনের ঘটনাকে চরম গর্হিত কাজ বলে জানিয়েছেন। এরপর গজলশিল্পী মেজবাহ আহমেদের নিকটজনের মধ্য থেকে কয়েকজন এ ঘটনার মিমাংসা করতে চেয়েছিলেন।
মেজবাহ আহমেদকে রাজধানীর মগবাজারের একটি স্টুডিওতে শুক্রবার (২০ জুন) ডেকেছিলেন। তবে তিনি আসেননি। কিন্তু গতকাল (২১ জুন) পার্থ মজুমদারের ম্যাসেঞ্চারে একটি অডিও বার্তা পাঠিয়ে এ ঘটনার জন্য মেজবাহ আহদেম ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি এটকে একটি নিছক দুর্ঘটনা হিসেবে দেখার জন্য পার্থকে অনুরোধ জানিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে আজ দুপুর দেড়াটার দিকে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা হয় পার্থ মজুমদারের সঙ্গে। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘মেজবা আহমেদ আমার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন, ঠিক যে ভাষায় একজন মানুষ অপরাধ করলে ক্ষমা চায়। তিনি ক্ষমা চেয়ে আমার ম্যাসেঞ্জারে একটি অডিও বার্তা পাঠিছেন। আমিও তাকে মনে মনে ক্ষমা করে দিয়েছি। কিন্তু তার ম্যাসেঞ্জারে আমি কোনো জবাব দেইনি।’
Advertisement
পার্থ মজুমদারের কাছে মেজবাহ আহমেদের পাঠানো অডিও বার্তাটিতে হচ্ছে, ‘দাদা, যেকোনোভাবেই হোক একটা বড় দুর্ঘটনা ঘটে গেছে। একটা অন্যায় হয়ে গেছে। আপনি আমাদের শ্রদ্ধেয় বড় ভাই। আমি মনে করি, আপনি আমাদের সংগীতাঙ্গনের অসাধারণ শিল্পী, অসাধারণ মানুষও। আমি নিজেও খুব দুঃখিত, খুব আত্মগ্লানিতে ভুগছি। পল্লবদা, ছোট ভাই রাজীব, আমার বন্ধু সুমন (আসিফ)—ওরা সবাই আমাকে জানিয়েছে। আমি আপনার ফেসবুক পোস্ট দেখেছি। ওরা স্ক্রিনশট পাঠিয়েছে। আপনি মনে কিছু রাইখেন না, এটা সত্যিই আমার অন্যায় হয়ে গেছে। ’
বাপ্পা মজুমদার ও পার্থ মজুমদার। ছবি: সংগৃহীত
শুক্রবার পার্থ মজুমদার জাগো নিউজকে বলেছিলেন, ‘তার (মেজবাহ আহমেদ) সঙ্গে আমার কখনো দেখা-সাক্ষাৎ বা কথাবার্তা হয়েছে বলে মনে পড়ে না। আজ সকাল ৯টার কিছু পরে তিনি আমাকে ম্যাসেঞ্জারে কল করেন। তার ফোনে আমার ঘুম ভাঙে। ফোনে তিনি আমাকে বলা শুরু করেন, তিনি আমার বাবার (পণ্ডিত বারীণ মজুমদার) ভীষণ ভক্ত। তিনি আমার বাবাকে ভীষণ ভালোবাসেন। সেই প্রসঙ্গে কথা হচ্ছিল, একপর্যায়ে তিনি বলেন, “আপনার বাবা তো একজন ক্ল্যাসিক্যাল শিল্পী ছিলেন, আপনারা কেন সেদিকে যাননি?” বললাম, “এটা আমাদের ভালো লাগে, তাই এভাবে আমরা লাইট মিউজিকে চলে এসেছি। এ নিয়ে বাবাও কোনোদিন আপত্তি করেননি। বাবা বলেছেন, “করলে ভালো করে করতে হবে।” মেজবাহ সাহেবের সঙ্গে কথা চলতে থাকলে একপর্যায়ে হঠাৎ তিনি বলেন, “আপনারা তো আপনার বাবা-মায়ের কলঙ্ক।” এ কথা শুনে আমি ভ্যাব্যাচ্যাক্যা খেয়ে যাই। আমি তাকে বললাম, “আপনি এভাবে কেন কথা বলছেন?” এরপর তিনি আরও বাজেভাবে কথা বলতে শুরু করেন, যা অত্যন্ত অশোভন।’
তিনি কেন এমন করলেন? জানতে চাইলে পার্থ মজুমদার বলেন, ‘জানি না। মেসেঞ্জারে মাঝে মধ্যে আমাকে গান পাঠাতেন, রিপ্লাই দিইনি কখনও। সেই ক্ষোভ থেকেও হতে পারে।’
Advertisement
পার্থ আরও বলেন, ‘একজন মানুষকে কথা দিয়ে যেভাবে আঘাত করা যায়, তার কথার ধরণ ছিল সে রকম। পরে আমি তাকে বললাম, “আমার কাজ বা সংগীতজীবন নিয়ে আপনি তো ভাই এভাবে কথা বলতে পারেন না। আমার পছন্দ-অপছন্দ আমার মতো। প্রত্যেকটা মানুষেরই তো নিজস্ব রুচি থাকে, সেভাবেই সে কাজ করবে।” এ কথা শুনে সে উত্তেজিত হয়ে যায়। আমাকে বলে, “আমি আপনাকে থাপড়াবো।” এ ধরনের কথা ভীষণভাবে অপ্রত্যাশিত। আমি তার এ কথা শুনে বললাম, “বলেন আমাকে কোথায় আসতে হবে? আমিই আসি। আপনাকে কষ্ট করে আমার কাছে আসতে হবে না।” এরপর তিনি মুখে যা আসে বললেন। শুনে আমার ভীষণ খারাপ লেগেছে। আমি মনে ভীষণ আঘাত পেয়েছি।’
ঘটনা প্রসঙ্গে বাপ্পা মজুমদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বড় ভাইয়ের কাছ থেকে তিনিও ঘটনাটি জেনেছেন। শুনে তিনিও স্তম্ভিত।
কেন এমন করলেন? জানতে মেজবাহ আহমেদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। জাগো নিউজের পরিচয়ে ক্ষুদেবার্তা দিয়ে রাখলেও তিনি সাড়া দেননি।
এমএমএফ/জেআইএম