বাইক শুধু একটি বাহন নয় অনেকের কাছে এটা প্রিয় সঙ্গী, কর্মজীবনের সঙ্গী, আবার কারো কারো কাছে স্টাইল স্টেটমেন্ট। কিন্তু আমরা অনেকেই নিয়মিত বাইক চালালেও এর যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সাধারণ ভুল করে থাকি। এসব ছোট ছোট ভুল থেকেই জন্ম নেয় বড় বড় সমস্যা-পারফরম্যান্স কমে যায়, মেরামতের খরচ বেড়ে যায়, এমনকি দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে।
Advertisement
বাইকের যত্ন নিতে হলে সচেতন হওয়াটাই সবচেয়ে জরুরি। উপরের এই সাধারণ ভুলগুলো এড়িয়ে চলতে পারলে আপনার বাইকের পারফরম্যান্স যেমন বাড়বে, তেমনি দীর্ঘমেয়াদেও সেভাবে সার্ভিস দেবে। যত্ন নিলে বাইকও আপনার প্রতি বিশ্বস্ত সঙ্গী হয়ে থাকবে।
আসুন জেনে নেওয়া যাক বাইকের যত্নে সবচেয়ে বেশি করা সাধারণ ভুলগুলো কী- ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তনে অবহেলাঅনেকেই মাসের পর মাস ইঞ্জিন অয়েল না বদলে বাইক চালান। এতে ইঞ্জিনের ঘর্ষণ বেড়ে যায়, তাপমাত্রা বাড়ে এবং দীর্ঘমেয়াদে ইঞ্জিনের ক্ষতি হয়। প্রতি ১,০০০-২,০০০ কিলোমিটার পর (বা কোম্পানির নির্দেশনা অনুযায়ী) ইঞ্জিন অয়েল চেঞ্জ করুন।
চেইন পরিষ্কার না করাচেইন ময়লা থাকলে বাইকের মাইলেজ ও পারফরম্যান্স কমে যায়। আবার অনেক সময় অনেকে চেইন খুব বেশি টাইট করে দেন, যা গিয়ারবক্সে চাপ ফেলে। প্রতি ৫০০-৭০০ কিলোমিটার পর চেইন পরিষ্কার ও লুব্রিকেট করুন। চেইনের টান মাঝারি হওয়া উচিত।
Advertisement
অনেকেই ব্রেকে অদ্ভুত শব্দ শোনার পরও ভাবেন আপাতত চলছে। কিন্তু এই দেরি বিপজ্জনক হতে পারে। তাই ব্রেক প্যাড বা ব্রেক শু ৫,০০০-১০,০০০ কিলোমিটার পর পর চেক করুন। শব্দ হলে সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন করুন।
টায়ার প্রেসার ঠিকমতো না দেখাঅতিরিক্ত বা কম টায়ার প্রেসার থাকলে মাইলেজ কমে যায়, টায়ার দ্রুত ঘষে যায় এবং রাইডিং কমফোর্টও নষ্ট হয়। প্রতি সপ্তাহে একবার টায়ার প্রেসার চেক করুন এবং কোম্পানির গাইড অনুযায়ী রাখুন।
বৃষ্টির দিনে বাইক শুকিয়ে না রাখাঅনেকেই এই ভুলটিও করেন। বৃষ্টিতে বাইক চালিয়ে বাড়ি এসে ভেজা, কাদা অবস্থায় বাইকটি ফেলে রাখেন। বৃষ্টির পানি বা কাদা বাইকে লেগে থাকলে ধীরে ধীরে মরিচা পড়ে যায় এবং পার্টস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বৃষ্টির পর বাইক শুকিয়ে ফেলুন, প্রয়োজনে পানি মুছে নিন এবং চেইনে লুব্রিকেন্ট দিন।
লোকাল বা নিম্নমানের পার্টস ব্যবহারঅনেকেই টাকা বাঁচাতে গিয়ে উলটা আরও বড় আর্থিক খরচে পড়েন। কমদামি পার্টস ব্যবহার করেন বাইকে। কম দামে অরিজিনাল লুকের পার্টস পেলেও এগুলোর মান কম হয়। এগুলো ইঞ্জিন বা অন্যান্য যন্ত্রাংশের ক্ষতি করতে পারে। যতটা সম্ভব ব্র্যান্ডেড বা অরিজিনাল স্পেয়ার পার্টস ব্যবহার করুন।
Advertisement
অনেকেই বাইক মাসের পর মাস চালান না, অথচ তেল বা ব্যাটারি সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেন না। দীর্ঘদিন ব্যবহার না করলে ব্যাটারি খুলে রাখুন, ট্যাঙ্ক ফাঁকা করুন বা ফুয়েল স্ট্যাবিলাইজার ব্যবহার করুন।
সময়মতো সার্ভিসিং না করাঅনেকে শুধু বাইকে সমস্যা দেখা দিলে তখনই গ্যারেজে যান। অথচ নিয়মিত সার্ভিসিং করলে অনেক ঝামেলা আগেই ধরা পড়ে। অন্তত ২-৩ মাস পর পর একবার সার্ভিসিং করান, বিশেষ করে যদি আপনি প্রতিদিন বাইক ব্যবহার করেন।
আরও পড়ুন গরমে বাইকে আগুন লাগা এড়াবেন যেভাবে প্রথম বাইক কেনার ক্ষেত্রে কোন মডেল বেছে নেবেনকেএসকে/জিকেএস