আইন-আদালত

আমাকে গ্রেফতার নয়, অপহরণ করা হয়েছিল: মেঘনা আলম

আমাকে গ্রেফতার নয়, অপহরণ করা হয়েছিল: মেঘনা আলম

রাজধানীর ধানমন্ডি থানার প্রতারণা ও চাঁদাবাজির মামলায় জব্দ মোবাইল ফোন, আইপ্যাড ও পাসপোর্ট নিজের জিম্মায় রাখতে চেয়ে আবেদন করেছেন মডেল ও অভিনেত্রী মেঘনা আলম। তিনি শুনানি শেষে আদালতকে বলেছেন, আমি মডেল নই, পলিটিক্যাল লিডারশিপ ট্রেইনার। আমাকে গ্রেফতার নয়, বাসা থেকে অপহরণ করা হয়েছিল।

Advertisement

রোববার (২২ জুন) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলামের আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ফেরত চেয়ে এ আবেদন করেন মেঘনা।

এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামীকাল সোমবার দিন ঠিক করেন আদালত। মেঘনার আইনজীবী তাহমীম মহিমা বাঁধন ও মহসিন রেজা এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এদিন আদালতে হাজির হন মেঘনা আলম।

আরও পড়ুন

Advertisement

মডেল মেঘনাকে অপহরণের অভিযোগ সঠিক নয়: ডিএমপি মডেল মেঘনা আলমের গ্রেফতারের প্রক্রিয়া সঠিক হয়নি: আইন উপদেষ্টা

শুনানি শেষে মেঘনা আলম আরও বলেন, গণমাধ্যম একটা মানুষকে নিয়ে নিউজ করার আগে তার আইডেনটিটি স্পেসিফিক করা গুরুত্বপূর্ণ। মিডিয়ায় আমাকে মডেল মেঘনা বলে উপস্থাপন করা হয়েছে৷ কিন্তু প্রোফেশনাল আইডেনটিটি হচ্ছে আমি একজন পলিটিক্যাল লিডারশিপ ট্রেইনার।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষদের একটা বিষয়ে পরিষ্কার হওয়া দরকার। আমার বিরুদ্ধে কোনো রাষ্ট্রদূতের ফরমাল অভিযোগ নেই। যে রাষ্ট্রদূতের কথা বলা হচ্ছে, তিনি যদি ক্ষতিগ্রস্ত হন বা ভিকটিম হন আদালতে এসে প্রমাণ দিয়ে যাক। মিথ্যা মামলা চালিয়ে রাষ্ট্র ও আমার বা সেই রাষ্ট্রদূতের কোনো লাভ হচ্ছে না।

নিজের গ্রেফতার নিয়ে মেঘনা বলেন, গত ৯ এপ্রিল আমাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে যে তথ্য এসেছে সেটি ভুল। আমাকে অপহরণ করা হয়েছিল। কারণ, গ্রেফতার করার একটি আইনি প্রক্রিয়া থাকে, সেটা মানা হয়নি। আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ, মামলা বা ওয়ারেন্ট ছিল না। আইনের লোক হোক বা না হোক আমার বাসায় এসে তাৎক্ষণিকভাবে হামলা করে জোর করে নিয়ে যায়। এটিকে আইনি ভাষায় অপহরণ বলে, গ্রেফতার নয়।

এর আগে গত ২৮ এপ্রিল ডিটেনশন আইনে মেঘনা আলমের ৩০ দিনের আটকাদেশ বাতিল করা হয়। ওইদিনই কারামুক্ত হন তিনি। এরপর থেকে তিনি জামিনে।

Advertisement

গত ৯ এপ্রিল বাসা থেকে আটক হন মেঘনা আলম। পরদিন ১০ এপ্রিল বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের আটকাদেশ দিয়ে মেঘনাকে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ১৭ এপ্রিল রাজধানীর ধানমন্ডি থানার প্রতারণা ও চাঁদাবাজির মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

২৮ এপ্রিল এ মামলায় তিনি জামিন পান। ওইদিন ডিটেনশন আইনে মেঘনা আলমের ৩০ দিনের আটকাদেশ বাতিল করা হয়। পরদিন তিনি কারামুক্ত হন।

আরও পড়ুন

মেঘনা আলম কারামুক্ত মেয়ের সম্পর্ক ও বাগদান নিয়ে যা বললেন মেঘনার বাবা

মামলায় অভিযোগ থেকে জানা যায়, মেঘনা আলম, দেওয়ান সমিরসহ অজ্ঞাতপরিচয় দুই থেকে তিনজনের একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা বিভিন্ন সুন্দরী মেয়েদের দিয়ে বাংলাদেশে কর্মরত বিভিন্ন বিদেশি রাষ্ট্রের কূটনীতিক, প্রতিনিধি ও দেশীয় ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করে। পরে সুকৌশলে তাদের সম্মানহানির ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করে আসছে।

দেওয়ান সমির কাওয়াই গ্রুপ নামক একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সিইও এবং সানজানা ইন্টারন্যাশনাল নামক একটি ম্যানপাওয়ার প্রতিষ্ঠানের মালিক মর্মে জানা যায়। এছাড়া তার মিরআই ইন্টারন্যাশনাল ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল। দেখতে আকর্ষণীয় ও স্মার্ট মেয়েদের তার প্রতিষ্ঠানে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে নিয়োগ দিয়ে বিদেশি কূটনীতিক ও ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের কাছে সহজে যাতায়াত নিশ্চিত করা ছিল তার উদ্দেশ্য।

এমআইএন/এমকেআর/এমএস