সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিশেষ সুবিধা বাড়িয়ে নতুন অর্থবছরের (২০২৫-২৬) বাজেট পাস করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। চাকরিরতদের ন্যূনতম বিশেষ সুবিধা এক হাজার ৫০০ এবং পেনশনভোগীদের ন্যূনতম বিশেষ সুবিধা বাড়িয়ে ৭৫০ টাকা করা হয়েছে।
Advertisement
রোববার (২২ জুন) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এসময় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান ও অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটের তিনটি জায়গায় পরিবর্তন করে, বাকি অংকগুলো অপরিবর্তিত রেখে বাজেট পাস করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকারি চাকরিরতদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম এক হাজার ৫০০ টাকা এবং পেনশনভোগীদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৭৫০ টাকা বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। নিট পেনশন ১৭ হাজার ৩৮৮ টাকার ঊর্ধ্বে প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ এবং তার কমের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ হারে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। সরকারি চাকরিজীবীদের পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনী, বিচারপতি এবং এমপিওভুক্তদের ক্ষেত্রে পৃথক আদেশ করার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।
Advertisement
আরও পড়ুন
কালো টাকা বৈধ করার পথ বন্ধএর আগে গত ২ জুন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট জাতির সামনে তুলে ধরেন অর্থ উপদেষ্টা। পরদিন ৩ জুন অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আগামী ১ জুলাই থেকে বিশেষ সুবিধা পাবেন।
ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, প্রথম গ্রেড থেকে নবম গ্রেডের কর্মচারীরা প্রতিবছর তাদের মূল বেতনের অতিরিক্ত ১০ শতাংশ পাবেন এবং দশম গ্রেড থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীরা পাবেন ১৫ শতাংশ।
কর্মচারীদের জন্য সর্বনিম্ন প্রদেয় পরিমাণ হবে এক হাজার টাকা। পেনশনভোগীদের জন্য ৫০০ টাকা। অর্থাৎ এখন চাকরিরতের ন্যূনতম বিশেষ সুবিধা ৫০০ টাকা এবং পেনশনভোগীদের ন্যূনতম বিশেষ সুবিধা ২৫০ টাকা বাড়িয়ে নতুন অর্থবছরের বাজেট পাস করা হয়েছে।
Advertisement
অর্থ মন্ত্রণালয়ের ৩ জুনের প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, অবসরোত্তর ছুটিতে থাকা (পিআরএল), বরখাস্তকৃত কর্মচারী (তাদের শেষ মূল বেতনের ৫০ শতাংশ) ও কিছু চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রেও এ সুবিধা প্রযোজ্য হবে।
তবে যারা বিনা বেতনে ছুটিতে আছেন বা যাদের পেনশনের সম্পূর্ণ অংশ সমর্পণ করে এককালীন আনুতোষিক নিয়েছেন, তারা এ সুবিধার আওতায় আসবেন না। রাজস্ব বাজেটের বাইরে স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে এ সুবিধার খরচ তাদের নিজস্ব বাজেট থেকেই বহন করতে হবে।
এদিকে, নতুন অর্থবছরের বাজেটে আরও দুটি ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এরমধ্যে একটি সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী। এ বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী খাতে সুপারিশ করা ৮১ হাজার ২৯৭ কোটি টাকার পরিবর্তে ৯১ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে, যা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাজেটে ছিল ৯০ হাজার ৪৬৮ কোটি টাকা। অবসর ভাতা ও সঞ্চয়পত্রের সুদ এতে অন্তর্ভুক্ত নেই।
সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পরবর্তীসময়ে রপ্তানিনির্ভর প্রণোদনা ধীরে ধীরে প্রত্যাহারের তৃতীয় ধাপ হিসেবে হ্রাসের কার্যক্রম আগামী ১ জুলাই ২০২৫ এর পরিবর্তে ১ জানুয়ারি ২০২৬ করা হয়েছে।
এমএএস/এমকেআর/জিকেএস