বাংলাদেশে বিচার ব্যবস্থার জনমুখীকরণ ও স্বচ্ছতা বাড়াতে প্রায় ৫ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনা অনুদান দিচ্ছে সুইডেন ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)। এই সহায়তার আওতায় বিচার ব্যবস্থার সংস্কার ও উন্নয়নে চলমান কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে।
Advertisement
এ বিষয়ে রোববার ঢাকায় একটি আনুষ্ঠানিক চুক্তি সই হয়েছে বলে সোমবার (২৩ জুন) জানিয়েছে ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক কার্যালয়। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকাস্থ সুইডেন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মারিয়া স্ট্রিডসম্যান, ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ এবং সুপ্রিম কোর্ট ও আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এই প্রকল্পের আওতায় বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ, প্রসিকিউশন ব্যবস্থার উন্নয়ন, এবং বিশেষভাবে নারী, যুব ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকারকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। সুপ্রিম কোর্টের হটলাইন ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করা এবং অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়কে একটি পেশাদার প্রসিকিউশন সার্ভিসে রূপান্তরের বিষয়েও কাজ করা হবে।
সুইডেন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মারিয়া স্ট্রিডসম্যান বলেন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের সঙ্গে সুইডেনের দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারত্ব রয়েছে। বিচারখাতের সংস্কার ও ন্যায়বিচারে সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করতে আমরা দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
Advertisement
ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার বলেন, ২০২৪ সালের অন্যায় ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে তরুণদের প্রতিবাদের প্রেক্ষাপটে এই বিচার সংস্কার শুধু একটি উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ নয়, এটি ভবিষ্যতের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, গণতান্ত্রিক ও টেকসই ভবিষ্যতের পথে এগোচ্ছে।
তিনি আরও জানান, নিম্ন আদালতসহ সব পর্যায়ে বিচারিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে সরকার ও বিচার বিভাগকে আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা দেবে ইউএনডিপি। ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়া সহজ ও সবার জন্য প্রবেশযোগ্য করার পরিকল্পনাও রয়েছে।
এই প্রকল্পের আওতায় আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী বিচার সংস্কারে সমন্বয়, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং নারী অধিকার সংগঠনের সঙ্গে যৌথভাবে জেন্ডার-সংবেদনশীল সংস্কার বাস্তবায়নের কাজ চলবে। পাশাপাশি নাগরিক, আইনজীবী, গণমাধ্যম ও তরুণ সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।
সুইডেন ও ইউএনডিপির এই উদ্যোগ জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) ১৬ নম্বর লক্ষ্য- শান্তি, ন্যায়বিচার ও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
Advertisement
জেপি/এএমএ/জেআইএম