শিক্ষকদের উদ্দেশে অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেছেন, রাজনীতি করতে চাইলে শিক্ষকতা ছেড়ে দিন। পঙ্কিল রাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চলবে না।
Advertisement
সোমবার (২৩ জুন) দুপুর নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ২০ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
শিক্ষকদের উদ্দেশে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘কেউ যদি মনে করেন আপনি রাজনীতি করবেন, অবশ্যই আপনি রাজনীতির অঙ্গনে চলে যান। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা আপনি ছেড়ে দিন। কারণ রাজনীতিতে ভালো-যোগ্য লোকের দরকার আছে। সেখানেও আপনি সম্মান পাবেন। কিন্ত পঙ্কিল রাজনীতি আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্ত্বরে আনবেন না। এ হচ্ছে আমাদের আহ্বান। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সামনের দিনগুলো রাজনৈতিক সরকার আসবে, তারা বিষয়গুলোকে বিবেচনায় আনবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনার রাজনৈতিক বিশ্বাস থাকতে পারে কিন্তু সে রাজনৈতিক বিশ্বাস বিশ্বাসের পর্যায়ে থাকবে। তবে আপনি ওই রাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌহদ্দির মধ্যে আনবেন না। ক্যাম্পাসে আপনি শুধু শিক্ষার্থীদের প্রতি দায়িত্ব পালন করবেন।’
Advertisement
নিজের শিক্ষকতা জীবনের প্রসঙ্গ টেনে ড. চৌধুরী বলেন, “আমি ৪০ বছর নিষ্ঠার সঙ্গে শিক্ষকতা করেছি। জ্ঞানত আমি কখনো ফাঁকি দেইনি। সবসময় নীতিবান শিক্ষক হিসেবে আদর্শ ধারণ করার চেষ্টা করেছি। সব সময় পারিনি কিন্তু করেছি। কিন্তু যখনই আমি দেখেছি, আমারই বন্ধু-বান্ধব টিচার্স লাউঞ্জে বসে...তাদের ৩০-৪০টা ক্লাস নেওয়ার কথা। তার মধ্যে তারা ৪-৫টা ক্লাস নিচ্ছে। পরে তারা বাকী ক্লাস নিচ্ছেন না। ছাত্র প্রতিনিধি এসে যখন বলছেন যে, ম্যাডাম বা স্যার আপনাদের ক্লাস আছে। তখন বলে, ‘বসো গিয়ে, আমি আসছি’। আরও ১০-১৫ মিনিট গল্প করে তিনি গেলেন। আবার ক্লাস শেষ হওয়ার ১৫ মিনিট আগে তিনি ফিরে এলেন। এ ধরনের পরিস্থিতিও আমরা দেখেছি।”
গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, গবেষণা ছাড়া কোনো জাতি উন্নতির সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছাতে পারে না। গবেষণা হলো শিক্ষার প্রাণ। যে জাতি যত বেশি গবেষণায় অগ্রসর, সে জাতি তত বেশি উন্নত। শিক্ষা ও গবেষণা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পবিত্র দায়িত্ব।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবুল হোসেন, বর্তমান উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজওয়ানুল হক ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হানিফ, পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার নোয়াখালীর কমান্ড্যান্ট ডিআইজি মো. হায়দার আলী খান, জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ, জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল ফারুক, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক মাজহারুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
ইকবাল হোসেন মজনু/এসআর/এমএস
Advertisement